টিকাকরণ নিয়ে চাপের মুখে রয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে এদিন রাজ্যগুলির ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে টিকাকরণ নীতি বদলের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষণার আগেই রাজ্যগুলিকে টিকাকরণ নিয়ে চাপে রাখআর কৌশল অবলম্বন করে কেন্দ্র। সেই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের তরফে এদিন দাবি করা হয়, দেশের অন্তত ৯টি রাজ্যে টিকার অপব্যবহার চলছে। এই তথ্য প্রকাশের সময়ই কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়, রাজ্যগুলি যেভাবে টিকাকরণের বিকেন্দ্রীকরণের দাবি জানিয়েছিল, তা সঠিক ছিল না।
গত ১৬ জানুয়ারি দেশে টিকাকরণ শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মী এবং ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদেরকে টিকা দেয় কেন্দ্র। এরপর পর্যায়ক্রমে ষাটোর্ধ্ব এবং পরে ৪৫ উর্ধ্ব কোমর্বিডিটি যুক্ত মানুষদের টিকা দেওয়া হয় দেশে। তবে ১৮-৪৪ বছর বয়সীদের টিকাকরণের ঘওষণার পর থেকে রাজ্যগুলি টিকাকরণের আকালের অভিযোগ তুলতে থাকে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্তরেও বিরোধীরা মোদী সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে টিকাকরণ নিয়ে। এই আবহে এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদী রাজ্যগুলির ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে টিকাকরণের নীতি বদলের ঘোষণা করলেন। জানিয়ে দেন, দেশের ৭৫ শতাংশ টিকাকরণের দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্র। রাজ্যগুলিকে টিকা দেওয়ার 'চাপ' থেকে মুক্তি দেন তিনি।
তবে এই ঘোষণার আগেই টিকাকরণ নীতি নিয়ে অ-বিজেপি রাজ্যগুলির উপর চাপ সৃষ্টির কৌশল অবলম্বন শুরু করে কেন্দ্র। এদিন একটি তথ্য পেশ করে দাবি করা হয়, রাজস্থান, পঞ্জাব, ছত্তিসগড়, তেলাঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, কেরল, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লিতে টিকার অপব্যবহার হয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, এই রাজ্য়গুলির হাতে যত টিকা ছিল, তত টিকা তারা প্রয়োগ করতে ব্যর্থ। তবে তা সত্ত্বেও তারা টিকার আকালের অভিযোগ তুলেছিল। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের তালিকায় এই ৯ রাজ্যই অ-বিজেপি রাজনৈতিক দল শাসিত।
কেন্দ্রের তথ্য় বলছে গত তিন মাসে রাজস্থানের কাছে ১০.৫৭ মিলিয়ন ডোজ থাকলেও তারা প্রয়োগ করতে পেরেছে ৫.৭২ মিলিয়ন ডোজ। পঞ্জাবের কাছে ২.৮৯ মিলিয়ন ডোজ থআকলে তারা প্রয়োগ করতে পেরেছে ০.৮৪ মিলিয়ন ডোজ। ছত্তিশগড়ের কাছে ৪.২৬ মিলিয়ন ডোজ থাকলেও তারা প্রয়োগ করতে পেরেছে ১.৯৪ মিলিয়ন ডোজ। তেলাঙ্গানার কাছে ৪.১৪ মিলিয়ন ডোজ থাকলেও তারা প্রয়োগ করতে পেরেছে ১.৩ মিলিয়ন ডোজ। অন্ধ্রপ্রদেশের কাছে ৬.৫৫ মিলিয়ন ডোজ থাকলেও তারা প্রয়োগ করতে পেরেছে ২.৬১ মিলিয়ন ডোজ। ঝাড়খণ্ডের কাছে ৩.০৭ মিলিয়ন ডোজ থাকলেও তারা প্রয়োগ করতে পেরেছে ১.৬ মিলিয়ন ডোজ। কেরলের কাছে ৬.২৮ মিলিয়ন ডোজ থাকলেও তারা প্রয়োগ করতে পেরেছে ৩.৪ মিলিয়ন ডোজ। মহারাষ্ট্রের কাছে ১৪.৩৩ মিলিয়ন ডোজ থাকলেও তারা প্রয়োগ করতে পেরেছে ৬.২১ মিলিয়ন ডোজ। দিল্লির কাছে ৪.৩৬ মিলিয়ন ডোজ থাকলেও তারা প্রয়োগ করতে পেরেছে ২.৪২ মিলিয়ন ডোজ।