মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আজ লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। প্রস্তাবের পক্ষে আজ শুরুতেই বিরোধীদের তরফে বক্তব্য পেশ করেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। সেখানে তিনি বলেন, 'ডবল ইঞ্জিনের ব্যর্থতা স্বীকার করতে হবে বলেই মণিপুর ইস্যুতে মৌনব্রত প্রধানমন্ত্রী মোদীর'। আজ গৌরব বলেন, 'সংসদে বক্তব্য না দিয়ে কেন মৌন ব্রত পালন করছেন প্রধানমন্ত্রী? তাঁর নীরবতা ভাঙতেই আমাদের এই অনাস্থা প্রস্তাব। তাঁর কাছে আমাদের তিনটি প্রশ্ন- প্রথমত, তিনি কেন আজও পর্যন্ত মণিপুর সফরে গেলেন না? দ্বিতীয়, মণিপুরে রাহুল গান্ধী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ অন্যরা গিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কেন যাননি? শেষ পর্যন্ত মণিপুর ইস্যুতে কথা বললেও কেন মুখ খুলতে তাঁর প্রায় ৮০ দিন লেগেছিল? আর যখন তিনি কথা বললেন, তখন মাত্র ৩০ সেকেন্ডের জন্যই মুখ খুললেন? তৃতীয়ত, কেন প্রধানমন্ত্রী এখনও পর্যন্ত মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেননি? এর আগে গুজরাট, উত্তরাখণ্ড, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীদের সরিয়েছেন তিনি।'
মোদী ও বিজেপি সরকারের উদ্দেশে গৌরব গগৈ বলেন, 'দেশের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী সংসদে আসুন, সমবেদনা জানান, এটাই চেয়েছিলাম আমরা। মণিপুরের মানুষ যাতে জানতে পারে যে, গোটা দেশ তাঁদের পাশে রয়েছে। কিন্তু তা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী মৌনব্রত পালন করছেন। না লোকসভা, না রাজ্যসভা। কোথাও তিনি মুখ খুলতে রাজি হননি। তাঁর মৌনব্রত ভাঙতেই অনাস্থা প্রস্তাব এনেছি আমরা। প্রধানমন্ত্রী কেন নীরব? এর কারণ হল, মণিপুর হিংসা নিয়ে কথা বললে মণিপুরে বিজেপি-র ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ব্যর্থতা স্বীকার করতে হবে। মণিপুর অথবা উত্তর পূর্বাঞ্চলে এই প্রথম হিংসার ঘটছে না। এর আগেও ঘটেছে এমন ঘটনা। আমি নিজে সেখানকার বাসিন্দা। তাই আমি জানি।'
মোদীকে আক্রমণ শানিয়ে গৌরব আজ বলেন, '২০২১ সালে দেশে যখন কোভিড পরিস্থিতি ছিল, সেই সময় পশ্চিমবঙ্গে ভোট চাইছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর যখন কয়েকদিন আগে মণিপুর জ্বলছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন কর্ণাটকে ভোট চাইতে। এটা কেমন রাষ্ট্রবাদ? দেশের থেকে এখানে ক্ষমতাকে আগে রাখা হয়।' গৌরব বর্তমান সরকারকে আক্রমণ করতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপির সহপ্রতিষ্ঠাতা অটল বিহারী বাজপেয়ীকেও উদ্ধৃত করেন। বলেন, 'বাজপেয়ী রাজধর্ম পালনের কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন, রাজা বা শাসকের কখনও প্রজাদের বৈষম্যের নজরে দেখা উচিত নয়। জন্ম, জাতি, সম্প্রদায়ের নিরিখে প্রজাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হতে দেওয়া উচিত নয়।'