ঐতিহাসিক স্থানের সংরক্ষণের মূল লক্ষ্য হয় ইতিহাস ধরে রাখা। তবে সংস্কারের নামে ইতিহাস মুছে ফেলা হলে তা নিয়ে বিতর্ক হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর এই কারণেই বিতর্ক সৃষ্টি হল জালিয়ানওয়ালাবাগের কেন্দ্রের সৌন্দর্যায়নকে ঘিরে। ঐতিহাসিকদের একাংশের দাবি, এই সৌন্দর্যায়নের মাধ্যমে সেই সময়কার ইতিহাসকে মুছে ফেলা হয়েছে। শহিদদের প্রতি এটি অসম্মানের!
উল্লেখ্য, ১০২ বছর জেনারেল ডোয়ারের নেতৃত্বাধীন বাহিনী বৈশাখীর জমায়তে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শতাধিক ভারতীয়কে হত্যা করেছিল। সেই জালিয়ানওলালাবাগের রূপের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। যেই সরু গলি দিয়ে ব্রিটিশ সেনা পার্কে ঢুকেছিল, সেই গলির দুই দেওয়ালে করা হয়েছে শিল্পকর্ম। তবে এতে বদলেছে ঐতিহ্য। ব্রিটিশ সেনার গুলি থেকে বাঁচতে যেই কুয়োতে ঝাপ দিয়েছিলেন সবাই, সেই কুয়ো ভেঙে নতুন করে গড়া হয়েছে, যা নিয়ে আপত্তি রয়েছে অনেকেরই। পাশাপাশি লেজার শোতেও আপত্তি ঐতিহ্যের ধারক বাহকদের।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব টুইট করে লেখেন, 'এটা দেশের ঐতিহাসিক স্মারকের বাণিজ্যিকরণ। ঐতিহ্য মুছে আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে এখানে। যেই সময়কে এই স্মারক পরিবেশন করত, সেই সময়কার চিহ্নকে ধরে রেখে এর দেখাশোনা করা উচিত ছিল।' কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ বলেন, আমি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নানা রঙের ডিস্কো আলো লাগানোর বিরুদ্ধে। এতে জালিয়ানওয়ালাবাগের গুরুত্ব কমে গেল। এদিকে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, দিল্লিতে সেন্ট্রালভিস্তা প্রকল্পটি কীভাবে মোদী-আবাদ হিসেবে গড়ে তোলা হবে, এ তারই পূর্বাভাস।
উল্লেখ্য, জালিয়ানওয়ালাবাগ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের প্রধান নরেন্দ্র মোদী নিজে। ট্রাস্টে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহও রয়েছেন। জালিয়ানওয়ালাবাগ-কাণ্ডের শতবর্ষ উজ্জাপনের জন্য স্মারকের সংস্কারের কাজে ২০ কোটি টাকা খরচ হয়। আর্কিওলজিকাল সার্ভে, সংস্কৃতি মন্ত্রকের নজরদারিতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এনবিসিসি কাজ করে।