শনিবার রাত তখন ১ টা বেজে ৩৭ মিনিট। জম্মু বিমানবন্দর কেঁপে উঠল বিস্ফোরণে। এর পাঁচ মিনিট পরই ফের বিস্ফোরণ। এভাবেই দেশের মাটিতে প্রথমবার ড্রোন হামলা চালানো হয়। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে পরপর এই দু'টি বিস্ফোরণের নেপথ্যে ছিল পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা। এমনই তথ্য প্রকাশ করল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। পাশাপাশি পুলিশের তরফে জানানো হয়, এই হামলার মূল লক্ষ্য ছিল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল এবং বায়ুসেনার হেলিকপ্টর। জম্মু বিমানবন্দরের ভিতরে বায়ুসেনার বিশেষ টেকনিক্যাল এরিয়ায় বিস্ফোরণের খবর যখন প্রকাশ্যে আসে, তখন থেকেই অনুমান করা হয়েছিল যে এর নেপথ্যে পাকিস্তানের হাত থাকতে পারে। সেই অনুমানের উপরই সিলমোহড় দিল পুলিশ।
শনিবার রাতে প্রথমটি টেকনিক্যাল এরিয়ার একতলা বাড়ির ছাদে। যে বাড়িটির ছাড় ওড়ে সেটি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের পাশেই। এদিকে পরেরটি একটি খোলা জায়গায়। পুলিশ জানায়, এই বিস্ফোরণটি বায়ুসেনার হেলিকপ্টারকে নিশানা করে ঘটানো হয়েছিল। তবে দুটি বিস্ফোরণ লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি। বিস্ফোরণের তীব্রতা কম থাকার কারণে ক্ষয়ক্ষতি সেভাবে হয়নি।
এই বিস্ফোরণের পরে বিমানবন্দরের পরিষেবাও মোটের উপর স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানানো হয়েছে জম্মু বিমানবন্দরের তরফে। তবে দুটি উড়ান বাতিল করা হয়েছে। জম্মুর বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ইতিমধ্যেই পৌঁছে যান সিআরপিএফের ডিআইজি। পৌঁছান জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। বিস্ফোরণের খবর পাওয়া মাত্র প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বায়ুসেনার উপপ্রধান এয়ার মার্শাল এইচ এস অরোরার সঙ্গে কথা বলেন।
এদিকে জম্মুতে বিস্ফোরণের পর থেকেই পাঠানকোটে জারি করা হয়েছে কড়া সতর্কতা। এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। পাঁচ বছর আগে পাঠানকোটের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গিহানা হয়েছিল। পাঠানকোট ও সংলগ্ন স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে তাই বাড়তি নজরদারি চলছে। অতিরিক্ত জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডিজিপি দিলবাগ সিং সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, পে-লোড সহ ড্রোন ব্যবহার করে জম্মুর বায়ুসেনা ঘাঁটিতে বিস্ফোরক ফেলা হয়। ৫-৬ কেজি ওজনের আরও একটি আইইডি বিস্ফোরক পুলিশ উদ্ধার করেছে। অনুমান করা হচ্ছে উদ্ধার হওয়া ওই বিস্ফোরকটির সঙ্গে লস্কর-ই-তৈবার যোগ রয়েছে এবং কোনও একটি জনবহুল এলাকায় তারা সেটি লাগানোর ছক কষেছিল।