নব্বই দিনের মধ্যে পাকিস্তানে হবে নির্বাচন। এমনটাই জানালেন প্রাক্তন মন্ত্রী ফারুখ হাবিব। যদিও সদ্য ভেঙে দেওয়া জাতীয় সংসদের বিরোধী দলনেতা শেহবাজ শরিফ সাফ জানিয়েছেন, যেভাবে সংবিধানের লঙ্ঘন করেছেন ইমরান খানরা, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া হবে।
গত কয়েক সপ্তাহের চূড়ান্ত নাটকের পর রবিবার ইমরানের পরামর্শে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি। তারপরেই টুইটারে ফারুখ জানান, ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। যদিও কবে নির্বাচন হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন।
এমনিতে শেষ মুহূর্তের ‘রিভার্স সুইংয়ে’ রবিবার ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দেন পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। তারপরেই ইমরান বলেন, 'সংসদ ভেঙে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখেছি আমি। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন হওয়া উচিত। আমি পাকিস্তানের মানুষকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আর্জি জানাচ্ছি।' সেইসঙ্গে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দেওয়ায় ডেপুটি স্পিকারের প্রশংসা করেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা (এবং) বিদেশি ষড়যন্ত্রকে খারিজ করে দিয়েছেন (ডেপুটি স্পিকার)।’
অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল কেন?
গত কয়েকদিন ধরে ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট নিয়ে চূড়ান্ত নাটক চলেছে। একাধিকবার সংসদ মুলতুবি হওয়ার পর রবিবার ফের অধিবেশন শুরু হয়। ইমরান সরকারের মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী দাবি করেন, সরকারকে উৎখাত করতে বিদেশি শক্তি ষড়যন্ত্র করছে। গত ৭ মার্চ পাকিস্তানের দূতকে একটি বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাতে একাধিক দেশের প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল যে ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হচ্ছে। তাই অনাস্থা প্রস্তাব সংবিধানের পাঁচ নম্বর ধারা নম্বর লঙ্ঘন করছে বলে দাবি করেন ইমরান সরকারের মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সংসদ ভেঙে দিলেন রাষ্ট্রপতি, হবে ভোট, জনগণের পরীক্ষার মুখে বসবেন ইমরানরা
ফাওয়াদের সেই যুক্তি মেনে নেন ডেপুটি স্পিকার। ইমরান সরকারকে কার্যত বাঁচিয়ে দেন। পাকিস্তানের সংবিধানের পাঁচ নম্বর ধারা (রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক কর্তব্য) লঙ্ঘনের যুক্তি দেখিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দেন তিনি। তিনি জানান, ৮ মার্চ যে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল, তা আইন এবং সংবিধান মোতাবেক হওয়া উচিত। ‘ষড়যন্ত্র করে কোনও নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেব বিদেশি শক্তি, সেটার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।’ ফাওয়াদ যে যুক্তি দিয়েছেন, তা ‘বৈধ’।
তবে ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে বিরোধী দলগুলি। শেহবাজ বলেন, ‘এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার থেকে কম কিছু নয়। নৈরাজ্যের দিকে দেশকে ঠেলে দিয়েছেন ইমরান খান। নিয়াজি ও তাঁর সঙ্গীদেরকে মুক্তভাবে যেতে দেওয়া হবে না। নির্লজ্জভাবে সংবিধানের লঙ্ঘনের ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে। আশা করছি, সংবিধানের ধারা বজায় রাখতে নিজের ভূমিকা পালন করবে সুপ্রিম কোর্ট।’