পাঠানকোট হামলার হ্যান্ডলার শাহিদ লতিফকে (৪১) খুন করা হল পাকিস্তানে। ভারতীয় গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার পাকিস্তানের সিয়ালকোটে একটি মসজিদের ভিতরে জইশ-ই-মহম্মদের কম্যান্ডার শাহিদকে গুলি করে হত্যা করেছে দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালিয়ে তাকে খুন করেছে স্থানীয় লোকজনই। যে জইশ জঙ্গি ভারতের পাঠানকোট বায়ুঘাঁটির হামলার অন্যতম মূলচক্রী হলেও পাকিস্তানে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াত। মিলত জামাই আদর।
ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা জানিয়েছেন, বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) আওতায় শাহিদকে আগেই জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। যে দীর্ঘদিন ধরে সিয়ালকোটে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জইশের কমান্ড্যার ছিল। ভারতে একাধিক সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মের পরিকল্পনা এবং সমন্বয়ের কাজে যুক্ত থাকত শাহিদ। ঠিক যে কাজটা ২০১৬ সালে পাঠানকোট হামলার সময় করেছিল।
২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি রাতে ভারতীয় বায়ুসেনার পাঠানকোট ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল চার জঙ্গি। সেইসময় ওই চার জঙ্গির সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রেখে যাচ্ছিল কাশিফ জান ওরফে 'উস্তাদজি' এবং শাহিদ। ভারতের সুরক্ষা বাহিনীর সাতজনকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানের পঞ্জাব এবং সিন্ধ প্রদেশের চার জঙ্গি - নাসির হুসেন, আবু বকর, উমর ফারুখ এবং আবদুল কোয়াউম। পরবর্তীতে ওই চার জঙ্গিকেও খতম করা হয়েছিল। সেজন্য ৮০ ঘণ্টার অপারেশন চালিয়েছিল ভারতের জাতীয় সুরক্ষা বাহিনীর (এনএসজি) এবং ভারতীয় সেনা।
২০১৬ সালে পাঠানকোট হামলার চার্জশিট দাখিল করেছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। তাতে নাম ছিল জইশ প্রধান মৌলানা মাসদু আজহার, লতিফ, জান-সহ অন্যান্যদের। ওই চার্জশিটে দাবি করা হয়েছিল যে পাঠানকোট হামলার সময় দুটি স্লিপ রেখে গিয়েছিল জঙ্গিরা। এমনকী তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে পাকিস্তানের যৌথ তদন্তকারী দলকে পাঠানকোটে আসার অনুমতি দিয়েছিল ভারত। কিন্তু নিয়ম লঙ্ঘন করে ভারতের হাতে কোনও তথ্যপ্রমাণ তুলে দেয়নি ইসলামাবাদ।
অন্যদিকে, চার জঙ্গির কলরেকর্ড, তাদের ঠিকানা, পরিবারের সদস্যদের তথ্য, আল-রেহমত ট্রাস্টের আর্থিক অবস্থা সংক্রান্ত তথ্য (জইশের আর্থিক দিকের দেখভাল করে) এবং জইশের হ্যান্ডলারদের কথোপকথনের রেকর্ড পাকিস্তানের হাতে তুলে দিয়েছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। কারণ আরও অসংখ্য জঙ্গির মতো শাহিদকেও জামাই আদর করে রেখে দিয়েছিল পাকিস্তান। বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াত।