পেট্রোপণ্যের দাম একলাফে অনেকটাই বাড়ল বাংলাদেশে। প্রতি লিটারে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা করে বেড়েছে পেট্রোল ডিজেলের দাম। আর জ্বালানি তেল অগ্নিমূল্য হওয়ার পরই তার আঁচ লেগেছে সাধারণ মানুষের গায়ে।
গত শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে এই নতুন দাম কার্যকর করা হয়েছে। পেট্রোল, ডিজেলের সঙ্গে দাম বাড়ানো হয়েছে কেরোসিন এবং অকটেনেরও। পেট্রোলের দাম এক লাফে প্রতি লিটারে ৪৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে, বর্তমানে পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা হয়েছে ৮৬ টাকা থেকে। অন্যদিকে ডিজেলের দাম বেড়েছে ৩৪ টাকা। যেখানে আগে ডিজেলের দাম ছিল ৮০ টাকা, এখন সেটাই হয়েছে ১২৪ টাকা। অকটেনের দাম বেড়ে হয়েছে ১৩৫ টাকা, আগে ছিল ৮৯ টাকা। জ্বালানি তেলের ভর্তুকি তুলে দিল বাংলাদেশ সরকার। তার জেরেই এভাবে এক লাফে অনেকটাই দাম বেড়েছে জ্বালানি তেলের।
এর আগে বাংলাদেশে শেষ জ্বালানির দাম বেড়েছিল গত বছরের নভেম্বর মাসে। তখন পেট্রোল ডিজেলে ১৫ টাকা করে বেড়েছিল প্রতি লিটারে। পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির কথা ঘোষণা হতেই সেদিন রাতের ফিলিং স্টেশনগুলোর বাইরে লম্বা লাইন পড়ে যায়। সেদিনের পর আর তেমন পেট্রোল পাম্প বা ফিলিং স্টেশনগুলোর সামনে ভিড় চোখে পড়েনি।
শুধু তাই নয়, রাস্তায় চোখে পড়ার মতো কমে গিয়েছে বাস। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বাস পাচ্ছেন না যাত্রীরা ফলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। যে কটা বাস বা গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে তাতে দিতে হচ্ছে নির্ধারিত মূল্যের থেকে অনেক বেশি দাম। দিশারী পরিবহন সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যেখানে দিনে ৬০টি বাস চলে সেটাই এখন ১০টি চলছে। বাসভাড়া কী হবে সেটা ঠিক না করে এভাবে হুট করে দাম বাড়ানোর কারণেই বাস মালিকরা কম সংখ্যক বাস পথে নামাচ্ছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে সাধারণ যাত্রী এবং বাসের কন্ডাকটর, ড্রাইভারের সঙ্গে মারপিট শুরু হতে পারে। সাধারণ মানুষ কত ভাড়া গুনবে? কতক্ষণই বা অপেক্ষা করবে? আগে যে দূরত্বের জন্য ১০ টাকা ভাড়া নেওয়া হতো এখন সেখানেই ৩০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
ফলে এভাবেই এক লাফে এতটা দাম বাড়ানোর কারণে একাধিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এর থেকে মুক্তি কী করে মিলবে তা জানা নেই কারোরই। তবে এখনই বাস মালিকরা ধর্মঘট করছেন না বলেই জানিয়েছেন। কিন্তু এভাবে চললে যাত্রীদের সঙ্গে বাসের কন্ডাকটর, ড্রাইভারের ঝামেলা অবধারিত। শুধু তাই নয়, নিত্য যাত্রীদের ভোগান্তির পাশাপাশি অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বাড়ছে এভাবে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায়। এমনিতেই বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও মহামারীর প্রকোপ কাটিয়ে উঠতে পারেনি, তার মধ্যেই জ্বালানি বৃদ্ধির চাপ। দুইয়ে মিলে নাজেহাল অবস্থা নাগরিকদের।