শুরুটা হয়েছিল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এনআইটি) থেকে। এবার পড়ুয়াদের বিক্ষোভ ছড়াল শ্রীনগরের দুটি কলেজে। পয়গম্বরকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত পোস্ট করার অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। তারইমধ্যে বুধবার শ্রীনগর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যে পড়ুয়া ওই বিতর্কিত ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে এফআইআর রুজু করা হয়েছে। ওই পড়ুয়া আদতে শ্রীনগর বা জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা নন। তিনি পশ্চিম ভারতের একটি রাজ্য থেকে শ্রীনগরের এনআইটিতে পড়াশোনা করতে আসেন। তাঁর বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা করা হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
ওই পড়ুয়ার যে পোস্ট ঘিরে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে, সেটা ওই পড়ুয়া নিজে তৈরি করেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ। কাশ্মীরের ইনস্পেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (আইজিপি) ভিকে বির্দি জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর ভিডিয়ো পোস্ট করেন ওই পড়ুয়া। তবে তিনি নিজে সেই ভিডিয়ো তৈরি করেননি। ইউটিউবের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন বলে জানিয়েছেন কাশ্মীর পুলিশের আইজি।
আর সেই ভিডিয়ো নিয়েই তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তুমুল বিক্ষোভ হয় এনআইটিতে। তারপর বুধবার অমর সিং কলেজ এবং ইসলামিয়া কলেজ অফ সায়েন্স অ্যান্ড কমার্সেও শুরু হয় বিক্ষোভ। ইসলামিয়া কলেজে জড়ো হয়ে যান প্রচুর পড়ুয়া। তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন। পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে বেরিয়ে না যায়, সেজন্য দ্রুত ক্লাস বন্ধ করে দেওয়া হয়। কলেজের বাইরে মোতায়েন করা হয় প্রচুর পুলিশ। তারইমধ্যে বিক্ষোভরত এক পড়ুয়া দাবি করেন, পয়গম্বরের বিরুদ্ধে অবমাননাকর পোস্টের জেরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাই বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে।
একই ছবি ধরা পড়ে অমর সিং কলেজেও। ওই বিতর্কিত পোস্টের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করেন একদল পড়ুয়া। তাঁদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। কলেজের এক অধ্যাপক বলেন, 'শান্তিপূর্ণভাবেই বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে।' তারইমধ্যে শ্রীনগরের প্রেস কলোনিতেও বিক্ষোভ হয়। কালো জামা পরে জড়ো হন অনেক মানুষ। সেই পরিস্থিতিতে কেউ যাতে ভুয়ো খবর ব গুজবের ফাঁদে পা দেন, সেই আর্জি জানিয়েছে পুলিশ। শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছেন শ্রীনগরের প্রাক্তন মেয়র জুনেদ আজিম মাট্টুও।
তারইমধ্যে বুধবার শ্রীনগর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ওই বিতর্কিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিষয়টি নজরে এসেছে পুলিশের। এনআইটির রেজিস্ট্রারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ওই পড়ুয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫এ ধারা (ধর্ম বা ধর্মীয় বিশ্বাসের অবমাননা করে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চেষ্টা), ১৫৩এ ধারা (ধর্মের ভিত্তিতে দুই এবং ১৫৩ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রাক্তন পাক সেনারা কাশ্মীরে জঙ্গি হিসেবে কাজ করে, বড় ইঙ্গিত দিলেন ভারতীয় সেনা কমান্ডার