আরও একটা ১৪ ফেব্রুয়ারি। তিন বছর আগে এই দিনেই জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান আশ্রিত জঙ্গি শিবির। চোখের নিমেষে শহিদ হয়ে যান ভারতের ৪০ জন বীরপুত্র সেনা জওয়ান। সেই রক্তক্ষয় অধ্যায়ের স্মৃতি আজও ভুলতে পারেনি দেশ। ৪০ সিআরপিএফ জওয়ানকে হত্যার নেপথ্যে ছিল তাদের কনভয়ে হামলার ছক। যার নেপথ্য নায় ছিল জঙ্গি আদিল আহমেদ দার। কীভাবে এগিয়েছিল সেদিনের ঘটনা পরম্পরা? ফিরে দেখা যাক ২০১৯ সালের সেই অভিশপ্ত দুপুরকে।
২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। ৭৮ টি গাড়িতে ২৫০০ জন সিআরপিএফ জওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে কনভয় রওনা হয়েছিল জম্মু থেকে শ্রীনগরের দিকে। গাড়ি চলেছিল ন্যাশনাল হাইওয়ে ৪৪ এ। আচমকা কনভয়ে ঢুকে পড়ে একটি বাস। বিস্ফোরক বোঝাই ওই বাস মুহূর্তে বিস্ফোরিত হয়। ৭৬ তম ব্যাটালিয়ানের ৪০ জন সেনা জওয়ান শহিদ হন, ইতিউতি জ্বলতে থাকে আগুনের শিখা আর কালো ধোঁয়া। ২২ বছরের জঙ্গি আদিল দারও ওই বিস্ফোরণেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। কাশ্মীরের কাকাপোরার এই জঙ্গি বহুদিন ধরেই পাকিস্তানের জইশ এ মহম্মদ সংগঠনের সদস্য ছিল। ঘটনার পর এই জঙ্গি সংগঠন শিকার করে নিয়েছিল হামলার দায়।
ঘটনার পর এক মুহূর্তে চুপ করে থাকেনি দিল্লি। কূটনৈতিক কৌশলের সঙ্গে সামরিক কৌশলেও শান দেয় ভারত। পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা আমদানীকৃত সামগ্রীর শুল্ক ২০০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয় দিল্লি। পাকিস্তানকে দেওয়া মোস্ট ফেভার্ড নেশন তকমা তুলে নেয় ভারত। কূটনৈতিক পথে এই ঘটনার সঙ্গেই বিশ্বমঞ্চে পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিতে শুরু করে দেশ। FATF এর মঞ্চেও সন্ত্রাসে আর্থিক মদত ঘিরে ইসলামাবাদকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে ভারত। এরপর চলে সামরিক পথে জবাব। পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে পাকিস্তানের বালাকোটের জঙ্গি শিবিরকে গুঁড়িয়ে দেয় ভারতের বায়ুসেনা। তার পাল্টা হামলার চেষ্টায় ভারতের আকাশ সীমায় ঢুকে পড়ে পাক যুদ্ধবিমান। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তুঙ্গে ওঠে আতঙ্ক। এদিকে, ভারতের আকাশে পাক বিমান দেখেই তাকে পাল্টা যুদ্ধবিমান নিয়ে ধাওয়া করেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। পাকিস্তানে তিনি দুর্ঘটনাবশত অবতরণ করেন। পাকড়াও করা হয় তাঁকে। এরপর দিল্লির ক্রমাগত কূটনৈতিক চাপে শেষে ভারতের বীর উইং কমান্ডারকে ছাড়তে বাধ্য হয় পাকিস্তান।