প্রসূন সোনওয়ালকার
প্রাথমিক পর্যায়ে চলছে চীনা ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল। আর তাতেই সেই ফর্মুলেশন নিরাপদ বলে মনে করছেন গবেষকরা। শরীরে নিষ্ক্রিয় সম্পূর্ণ SARS-CoV-2 ভাইরাস (CoronaVac) রয়েছে এমন ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সী স্বেচ্ছাসেবীদের ওপর এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। এবং তাতে তাঁদের শরীরে তৈরি হয়েছে প্রতিক্রিয়াশীল অ্যান্টিবডি।
মঙ্গলবার ল্যানসেট ইনফেকশিয়াস ডিজিজ জার্নালে এই ফলাফল প্রকাশিত হয়। তাতে এই ভ্যাকসিন পরীক্ষায় সফল প্রার্থীদের সংখ্যাও ঘোষণা করা হয়েছে। এই চীনা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে ১৬ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত চীনে ৭০০ জনেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছিল।
জার্নালে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিনটি সমস্ত পরীক্ষিত ডোজে নিরাপদ এবং যথেষ্ট সহনীয়। বেশিরভাগ স্বেচ্ছাসেবীদের মতে, ইনজেকশনটি শরীরের যেখানে দেওয়া হচ্ছে সেখানে ব্যথা থাকছে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বলতে এইটুকুই। দেখা গিয়েছে, চূড়ান্ত ডোজের ১৪ দিনের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে ভ্যাকসিন। ১৪ দিন অন্তর একেবারে সামান্য ডোজে (3µg) ভ্যাকসিনের দুটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবীদের।
তবে এই ভ্যাকসিন কারও দেহে যা অ্যান্টিবডি তৈরি করছে তার থেকে অনেক বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে যাওয়া রোগীদের শরীরে। তবে গবেষকরা আশাবাদী যে এই ভ্যাকসিনটি ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।
এই ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা গিয়েছে, ১৪ দিন অন্তর দুটি ভ্যাকসিনের ডোজ দিয়ে প্রথম টিকাকরণের ২৮ দিনের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে তৈরি হচ্ছে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি। একইসঙ্গে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা মাথায় রেখে শরীরে সর্বোচ্চ অ্যান্টিবডি উৎপন্ন করার জন্য ভ্যাকসিনের ঠিক কতটা ডোজ দেওয়া প্রয়োজন তা–ও গবেষণা করে দেখা হয়েছে।
চীনের নানজিংয়ে জিয়াংসু প্রদেশের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের গবেষণার যৌথ প্রধান গবেষক ফেংচাই ঝু জানিয়েছেন, আমাদের গবেষণায় প্রমাণিত, ১৪ দিনের ব্যবধানে করোনাভ্যাক (CoronaVac) ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে শরীরে দ্রুত অ্যান্টিবডি তৈরি হতে থাকে। আমরা বিশ্বাস করি যে এই ভ্যাকসিন মহামারীর সময় আপৎকালীন পরিস্থিতিতে জরুরী প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। তবে টিকা দেওয়ার সময়সূচির পর অ্যান্টিবডির প্রতিক্রিয়া কত দিন অবধি থাকে তা দেখার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।