দুই দিন আগে একই হোটেলে বন্ধু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। দুই দিন পরে সেই হোটেলেরই জানলা দিয়ে পড়ে মৃত্যু হয় রুশ আইনপ্রণেতা পাভেল আন্তভ। পাভেলের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে আখ্যা দিয়েছে ওড়িশা পুলিশ। তবে পাভেলের মৃত্যু ঘিরে ক্রমেই রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। উল্লেখ্য, পাভেল পুতিন বিরোধী হিসেবে পরিচিত। এই পরিস্থিতিতে ওড়িশার রায়গড়ে ঘুরতে এসে এভাবে তাঁর মৃত্যু হওয়ায় চর্চা শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। ওড়িশার পুলিশের মহাপরিচালক (ডিজিপি) সুনীল বানসাল জোর দিয়ে বলেছেন যে দুই রাশিয়ান পর্যটকের মৃত্যুর নেপথ্যে তৃতীয় পক্ষের কোনও হাত নেই। তিনি আরও জানান, জেলা পুলিশকে এই ঘটনার তদন্তে সাহায্য করছে সিআইডি। পাশাপাশি তিনি এও জানান, প্রয়োজনে পুরো তদন্তভার গ্রহণ করবে সিআইডি।
মৃত্যুর তদন্তকারী রায়গড় টাউন থানার ইনচার্জ রশ্মি রঞ্জন প্রধান বলেছেন, 'আমাদের সন্দেহ যে তিনি হোটেলের ঘরের দ্বিতীয় তলায় টেরেস থেকে লাফ দিয়েছিলেন... আমরা একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছি এই ঘটনায়।' জানা গিয়েছে, নিদজের ৬৬তম জন্মদিন উপলক্ষে ওড়িশার রায়গড় অঞ্চলে ছুটিতে কাটাতে এসেছিলেন পাভেল। সেখানকারই এক হোটেল থেকে পড়ে গিয়ে এই মর্মান্তিক পরিণতি হল তাঁর। দিল্লির এক ট্রাভেল এজেন্টের ১৪ দিনের প্যাকেজে ওড়িশায় গিয়েছিলেন তিনি।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে তিনি জানলা দিয়ে লাফ দিয়েছিলেন। এদিকে কলকাতায় নিযুক্ত রাশিয়ার কনসাল জেনারেল অ্যালেক্সি ইদামকিন রুশ সংবাদসংস্থা TASS-কে বলেছেন যে তিনি পাভেল জানালা থেকে 'পড়ে গিয়েছেন'। তাঁর আরও দাবি, পুলিশ এই মৃত্যুর নেপথ্যে কোনও অস্বাভাবিক কিছু খুঁজে পায়নি। তিনি বলেন, 'আমরা তদন্তের গতিবিধি খুব কাছ থেকে অনুসরণ করছি এবং ওড়িশা পুলিশের কাছ থেকে সমস্ত তথ্য পাচ্ছি।'
এদিকে পাভেলের মৃত্যুর দুই দিন আগেই তাঁর দলের অপর এক সদস্য তথা তাঁর বন্ধুরও রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়। ৬১ বছর বয়সি ভ্লাদিমির বুদানভের মৃত্যু হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। এই একই হোটেলে ছিলেন ভ্লাদিমির। দাবি করা হয়, বুদানভ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান। প্রসঙ্গত, পাভেল এবং তাঁর দল পুতিন বিরোধী হিসেবে পরিচিত। এমনকী ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতায় সম্প্রচতি একটি ব্লগও লিখেছিলেন পাভেল। যদিও পড়ে চাপের মুখে পড়ে তিনি তাঁর ব্লগ সরিয়ে দেন এবং অবস্থান বদলের ঘোষণা করেন। তিনি ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছিলেন সেই পোস্টের জন্য। ব্লগে ইউক্রেন যুদ্ধকে রুশ 'সন্ত্রাস' বলে আখ্যা দিয়েছিলেন পাভেল। তবে পরে তিনি নিজেকে 'পুতিনের সমর্থক' হিসেবে দাবি করেন। যদিও রুশ মিডিয়ার একাংশের দাবি, পাভেল চিরকাল পুতিন বিরোধী থেকেছেন।