সৌদি আরবে আবারও মৃত্যুদণ্ড! এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সৌদি সরকারের দুর্নীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা করার জন্য একজন সরকারের সমালোচক মোহাম্মদ আল-গামদিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বলে জানা গেছে। আল-গামদি, তার ১০ টিরও কম ফলোয়ার যুক্ত এক্স অ্যাকাউন্ট (পূর্বে টুইটার) থেকে পোষ্ট করেছিল। গত জুলাই মাসে সৌদি আরবের সন্ত্রাস সংক্রান্ত মামলা পরিচালনকারী বিশেষ ফৌজদারি আদালত এই রায় দেয়।
এএফপি'র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, আল-গামদি'র পরিবার জানিয়েছে যে, মামলাটি সম্পূর্ন এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্টের উপর ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। সেখানে আল-গামদি'র ফলোয়ারের সংখ্যা মাত্র ৯ জন। পোস্টের মাধ্যমে সে সরকারের সমালোচনা করেছিলেন এবং কারাবন্দি সালমান আল-আওদা এবং আওয়াদ আল-কারনির মতো ধর্মীয় উলেমাদের মুক্তির জন্য সওয়াল করেছিল বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। সৌদি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন আল-গামদি’র ভাই। তিনি জানান, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কতটা দমনমূলক, সন্ত্রাস এবং রাজনৈতিক গ্রেপ্তারের দ্বারা কলুষিত, তাই প্রমাণিত করে এই রায় দান।
এদিকে, ALQST-এর মনিটরিং এবং কমিউনিকেশনের প্রধান লিনা আল-হাথলউল প্রশ্ন তুলেছেন, 'বিশ্ব কীভাবে বিশ্বাস করবে যে মাত্র ১০ জনেরও কম ফলোরেরে বেনামী অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করার জন্য তার মাথা কাটা হতে চলেছে?' তিনি আরও যোগ করে বলেন, 'সৌদি আদালত তাদের দমন-পীড়ন বাড়াচ্ছে এবং প্রকাশ্যে তাদের সংস্কারের ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ঢোল পেটাচ্ছে।’
এই মামলাটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন মানবাধিকার কর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়াতে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করছেন। উল্লেখ্য, সৌদি প্রায়ই তার নৃশংস মৃত্যুদণ্ডের কারণে বারবার শিরোনামে উঠে আসে। সমগ্র বিশ্বে তীব্র নিন্দার সম্মুখীন হতে হয় দেশটিকে তবুও কোথাও যেন বিরাম নেই। এএফপি রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশটি গত বছরে ১৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। এই বছর এখনও পর্যন্ত ৯৪টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ভিশন ২০৩০ এজেন্ডার অধীনে সৌদি আরবের সংস্কারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দেশের অভ্যন্তরে মানবাধিকার চর্চা এবং ভিন্নমতের শ্বাসরোধ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।