সম্প্রতি একের পর এক ভয়ঙ্কর র্যাগিংয়ের অভিযোগের সামনে এসেছে। সেই আবহে বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে র্যাগিং রুখতে কড়া নির্দেশিকা জারি করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সে ক্ষেত্রে সমস্ত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া র্যাগিং এবং আত্মহত্যার ক্ষেত্রে কলেজের অধ্যক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে জাতীয় অ্যান্টি র্যাগিং মনিটরিং কমিটির কাছে জবাবদিহি করতে হবে। শুধু তাই নয়, সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান র্যাগিং-বিরোধী নির্দেশিকা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনওভাবে গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছে ইউজিসি।
আরও পড়ুন: রায়গঞ্জ মেডিক্যালে জুনিয়র ছাত্রীদের র্যাগিং, অভিযোগ সিনিয়র ছাত্রদের বিরুদ্ধে
ইউজিসির তরফে জানানো হয়েছে, নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা না নিলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তার দায় এড়াতে পারবেন না। ভবিষ্যতে কোনও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগিং ও আত্মহত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও কলেজের অধ্যক্ষকে তলব করা হবে বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইউজিসি। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে, এত কঠোর নিয়ম থাকা সত্ত্বেও কীভাবে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটল? জবাবের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
র্যাগিং রুখতে যে সমস্ত নিয়ম রয়েছে তা মেনে চলতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে ইউজিসি। সেই অনুযায়ী, অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি, অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড, অ্যান্টি র্যাগিং সেল গঠন করতে হবে বলে জানিয়েছে ইউজিসি। এছাড়া, ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসিটিভি বসাতে হবে। এর পাশাপাশি র্যাগিং রুখতে কর্মশালা ও সেমিনারের আয়োজন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের ওয়েবসাইটে নোডাল অফিসারদের তথ্য দিতে হবে। এর পাশাপাশি, হস্টেল, ক্যান্টিন, বিশ্রাম কক্ষ, বাস স্ট্যান্ডে র্যাগিং বিরোধী পোস্টার লাগাতে হবে। ক্যাম্পাস জুড়ে অ্যান্টি র্যাগিং পোস্টার লাগাতে হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা যাতে ২৪ ঘণ্টার যেকোনও সময় ন্যাশনাল অ্যান্টি র্যাগিং হেল্পলাইনে (১৮০০-১৮০-৫৫২২) ফোন করতে পারে সেবিষয়ে তাদের অবগত করতে হবে। এছাড়াও ইমেইলেও (helpline@antiragging.in) অভিযোগ জানাতে পারবেন পড়ুয়ারা। ইউজিসি বলেছে, প্রতিটি অভিযোগ তদন্ত করতে হবে। যদি কোনও চিকিৎসা বা ইঞ্জিয়ারিং প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত অভিযোগ থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও কাউন্সিলকে একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত করতে হবে। এমনকী পুলিশের তদন্তও চলবে
ইউজিসির তরফে আরও জানানো হয়েছে, যদি নিয়ম লঙ্ঘন করা হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউজিসির স্পষ্ট বার্তা, র্যাগিং একটি অপরাধ এবং কেউ তার দায় এড়াতে পারবে না। নির্যাতিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কথা বলতে হবে। কাউকে শারীরিক বা মানসিকভাবে হয়রানি করা র্যাগিংয়ের আওতায় পড়ে বলেই জানিয়েছে ইউজিসি।