মার্কিন সংবাদমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়। সাংবাদিক খুনে অভিযুক্ত সৌদির চার আততায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই আধা-সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণ নিয়েছিল! মঙ্গলবার নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, আধা সামরিক প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য প্রতিরক্ষামূলক ছিল। সৌদি নেতাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এই প্রশিক্ষণ শিবিরের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই কারণে ওই প্রশিক্ষণ সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকরা সংস্থার ভূমিকার বিষয় মার্কিন কংগ্রেসকে লিখিত আকারে জানিয়েছে।
ওই রিপোর্টে নিউইয়র্ক টাইমস’ জানিয়েছে, ২০১৮ সালে ‘ওয়াশিংটন পোস্টের’ সৌদি বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে চারজন মিলে ঝাঁঝরা করে দেয়। অবশেষে ঘটনার তিন বছর পর জানা গেল, মার্কিন সাংবাদিক খুনে অভিযুক্ত আততায়ীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই আধা-সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। এই বিষয়ে নথি ও সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের বক্তব্যের সঙ্গে এই পত্রিকা জানিয়েছে যে, আমেরিকার দফতরের অনুমোদিত একটি চুক্তির অধীনে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, ‘সারবারাস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টে’র নামে একটি বেসরকারি ইক্যুইটি ফার্মের মালিকানাধীন টিয়ার ১ গ্রুপ এই প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে যে, এই সংস্থাটি সৌদি নেতাদের আরও ভালোভাবে সুরক্ষিত করতে পরিকল্পনা নিয়েছিল।
এই প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে বাহিনীকে শেখানো হয়েছিল যে, কীভাবে কোথাও বিপদ থাকলে, তা চিহ্নিত করতে হবে। একইসঙ্গে শত্রুপক্ষের আক্রমণের মোকাবিলাই বা কীভাবে করতে হবে।প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই প্রশিক্ষণ অনুমোদন করেছিলেন মার্কিন আধিকারিকরা।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সৌদি রাজবংশের ক্ষমতাধরদের কড়া সমালোচনার জন্য আলোচিত ছিলেন এই মার্কিন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। অভিযোগ উঠেছে, ২০১৮ সালে তাঁকে খুন করার অনুমোদন দিয়েছিলেন যুবরাজ সলমন। সরকারি তথ্যে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সালমান সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে খুন বা আটক করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অভিযানের অনুমোদন দিয়েছিলেন। সে বছর অক্টোবরেই তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে যাওয়ার পরই নিখোঁজ হন ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি।
পুলিশের ধারণা, ৫৯ বছরের সাংবাদিক খাশোগিকে শ্বাসরোধ করে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সৌদি সরকার বরাবরই এ হত্যাকাণ্ডে যুবরাজের জড়িয়ে থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য ওই সাংবাদিককে দুষ্কৃতীরা খুন করেছে।