সিকিমে ভয়াবহ তিস্তা বিপর্যয়ে এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে ৭৭ জন। দুমাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তাদের খুঁজে না পাওয়ায় মৃত ঘোষণা করল সিকিম সরকার। রাজ্যের মুখ্য সচিব ভি বি পাঠক শনিবার তাঁদের মৃত ঘোষণা করেছেন। এই অবস্থায় মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং অন্যান্য সাহায্য প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিকিম সরকার। দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য সচিব।
আরও পড়ুন: স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে সিকিম, পুনরায় চালু হল আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা
হড়পা বানে মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে দিচ্ছে সিকিম সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে ২ লক্ষ টাকা করে। সেইমতোই ওই ৭৭ জনের পরিবার কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মিলিয়ে ৬ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবেন। সিকিমে তিস্তা বিপর্যয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি মৃতদেহ সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। আবার কয়েকটি দেহ ভেসে গিয়েছিল ওপার বাংলায়। তারপরেও ৭৭ জন নিখোঁজ ছিলেন। এবার তাদেরকে মৃত ঘোষণা করল সিকিম সরকার। ফলে সিকিমে বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হল ১১৭ জন।
মুখ্য সচিব জানিয়েছেন, তাঁদের মৃত্যু শংসাপত্র ইস্যু করার পরেই পরিবারগুলি সুবিধাগুলি পাবেন। এরজন্য কী করতে হবে তাও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যসচিব। তিনি জানান, প্রথমে মৃতদের পরিবারকে থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করতে হবে। তারপর নিয়ম অনুযায়ী সংবাদপত্র, সোশ্যাল মিডিয়া এবং সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার আগে বিভিন্ন স্তরে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে হবে। যদি সিকিমের বাইরের কোনও ব্যক্তি নিখোঁজ হন তবে পরিবারকে তাদের রাজ্যে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে হবে। পরে তা খতিয়ে দেখার জন্য সিকিমে স্থানান্তর করতে হবে। প্রক্রিয়াগুলি সম্পন্ন হওয়ার পর মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হবে। তারপরে পরিবারগুলি ক্ষতিপূরণ পাবে।
উল্লেখ্য, গত ৪ অক্টোবর ভোররাতে তিস্তা নদীতে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে ভেঙে যায় বাঁধ। তারপরেই তিস্তার ভয়াবহ হড়পা বানে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয় এবং ৭৭ জন নিখোঁজ হন। এছাড়া রাজ্যের প্রায় ৮৮,০০০ জন মানুষ প্রভাবিত হয়েছিলেন। বহু দেহ ভেসে এসেছিল পশ্চিমবাংলায় । এছাড়াও, বেশ কিছু দেহ ভেসে গিয়েছিল ওপার বাংলায়। পাশাপাশি ভেসে যায় বহু ঘরবাড়ি। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সিকিমে। সেই সময় সিকিমে বহু পর্যটক আটকে পড়েছিলেন। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে সিকিম।