তালিবানের দখলে আফগানিস্তান। তারপরই বেড়েছে বোরখা-হিজাবের বিক্রি। বর্তমানের এই ছবির সঙ্গেই তুলনা করা হচ্ছে ১৯৭০ সালে আফগান মহিলাদের কিছু ছবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেগুলি। কিন্তু কতটা সত্যি সেই ছবিগুলি? আদৌ তাত্পর্যপূর্ণ?
প্রথমত নিচের এই ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। বলা হচ্ছে এটা ১৯৭০-এর আফগানিস্তানের মহিলাদের ছবি। কিন্তু দাবিটা একটু ভুল। এটি ১৯৭০-এরই বটে। তবে ছবিটা ইরানের তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের। ১৯৭১ সালে তোলা। ১৯৭৮-৭৯ সালে ইরানে ইসলামীয় শাসনের পূর্বের ছবি এটি। তবে এক্ষেত্রেও উগ্র ধর্মীয় শাসনের আগের ও পরের পরিস্থিতি স্পষ্ট। বর্তমান আফগানিস্তান পরিস্থিতিতে তাত্পর্যপূর্ণ।
এরপরের ছবিটি আফগানিস্তানের। ১৯৭০-এর দশকে আফগানিস্তানের মহিলাদের স্বেচ্ছায় পরিধানের স্বাধীনতার প্রতীক এই ছবি। এরপর ১৯৯৬-২০০১ সালে তালিবানি শাসন, ধর্মীয় উগ্রতায় এই স্বাধীনতা নিশ্তিহ্ন হয়ে যায়। জারি থাকে আরও ২০ বছর। আর এখন আবারও আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছে শরিয়ত আইন। ফলে আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে সেই ছবি। এর আগেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধর্মান্ধতার ফল বোঝাতে এই ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
যদিও আফগানদেরই একাংশ এই ছবিকে নারী স্বাধীনতার প্রতীক হিসাবে দেখতে নারাজ। তাঁদের মতে, শুধু মিনিস্কার্ট পরা কিছু মহিলাই একটা দেশের নারী স্বাধীনতার প্রধান ছবি হতে পারে না। এছাড়া এই ছবিগুলি শুধুমাত্র শহুরে এলাকায়, সীমিত কিছু স্থানের। শুধুমাত্র অত্যন্ত ধনী শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ। সেই সময়কার ৯৯% আফগানিস্তানের সঙ্গে এর মিল নেই, মত তাঁদের।।
চলতি মাসেই গাড়ির মধ্যে হিজাব পরেননি এক যুবতী। সেটা চোখে পড়ে তালিবানের। গাড়ি থামিয়ে টেনে নামানো হয় তাঁকে। মা, বাবা, ভাইয়ের চোখের সামনেই রাস্তায় হত্যা করা হয় তাঁকে। শুধু পরিধানেই যে ব্যাপারটা সীমাবদ্ধ, তেমনটা নয়। তালিবান মুখে বলছে, 'মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় বাধা নেই। শিক্ষিকাদের কাছে পঠনপাঠনে কোনও সমস্যা নেই।' কিন্তু বাস্তবটা আলাদা।