মহারাষ্ট্রের ভান্ডুপের বাসিন্দা প্রভাবতী নীলভে। বহুদিন ধরেই সকাল সকাল ওঠা অভ্যাস তাঁর। কিন্তু, এখন যেন আর পারেন না। এখনও সকাল সাড়ে ৬টায় ঘুম থেকে ওঠেন বটে। কিন্তু বিছানা ওঠার মতো জোর পেতে যেন আরও দুই ঘণ্টা সময় লাগে। 'অথচ আগে কিন্তু এমনটা ছিল না, এখন যেন সবসময়েই দুর্বল লাগে,' বলছিলেন বছর ৫০-এর প্রভাবতী। তবে তিনি একাই নন, একইরকম দুর্বলতা, আলস্যের কথা জানাচ্ছেন শ'য়ে শ'য়ে করোনাজয়ীরা। করোনার এই দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের বিষয়ে যে আরও দৃষ্টিপাত প্রয়োজন, তা বলাই বাহুল্য।
করোনাকে হারানোর পর আপাতত মুম্বইয়ের ফোর্টিস হাসপাতালে আছেন প্রভাবতী। আরও বহু করোনাজয়ীদের মতো রিহ্যাবিলিটেশনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, এই দূর্বলতা করোনা পরবর্তী শারীরিক প্রভাবেরই উপসর্গ। বহু রোগীই করোনা নেগেটিভ হওয়ার বেশ কিছুদিন পরেও দুর্বলতা, বুক ধড়পড়, শ্বাস কষ্টে ভুগছেন।
ফোর্টিস হাসপাতালের চিকিত্সক ডঃ কৃতি সাবনিস জানিয়েছেন, প্রায় ৩০% করোনা রোগীই রোগ থেকে সেরে ওঠার পর এই ধরণের সমস্যায় ভুগছেন। সাধারণ কাজকর্ম, যেমন স্নান, রান্না, হাঁটাচলা, ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে গিয়েও দুর্বলতা ঘিরে ধরছে তাঁদের। কোনওকিছুতেই শরীরে জোর পাচ্ছেন না তাঁরা।
কিছু ক্ষেত্রে এমন দুর্বলতা করোনা সেরে ওঠার পরেও ২ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত থেকে যাচ্ছে। এমনিতে মস্তিষ্কে করোনার প্রভাব আর কারও অজানা নয়। তার পাশাপাশি এই দুর্বলতারও সরাসরি প্রভাব পড়ছে মনে। ডিপ্রেশন, অ্যাঙসাইটির সিম্পটম দেখা দিচ্ছে করোনাজয়ীদের মধ্যে।
বেশিরভাগ চিকিত্সকই এক্ষেত্রে করোনার সময়ে ও তার পরবর্তী পর্যায়েও খাওয়াদাওয়ায় গুরুত্ব দিতে বলছেন। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, যেমন দুধ, ডিম. মাছ, মাংস, পনির, ছানা ইত্যাদি বেশি করা খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।

সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল ও ফল খেতে বলছেন তাঁরা। কলকাতার এক নিউট্রিশনিস্ট জানাচ্ছেন, ভিটামিন, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। সেই সঙ্গে বাড়াতে হবে ঘুম। ঘুমের সময়েই শরীরের কোষ মেরামত, নতুন কোষ গঠনের কাজ দ্রুত হয়। তাই রোজ অন্তত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা গভীর ঘুম প্রয়োজন।