চিনের সঙ্গে ক্রমশই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে সীমান্ত সমস্যা। এর সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে পড়শি পাকিস্তান, এমনটাই অনুমান করা হচ্ছে। সেই কারণে আগেভাগেই পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত। কোনও ভাবে আগ্রাসন দেখালে পাক সেনা বড় ক্ষতির মুখে পড়বে বলে সতর্ক করেন তিনি।
এদিন ভারত-মার্কিন নয়া চ্যালেঞ্জ সম্পর্কিত একটি সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই কথা বলেন বিপিন রাওয়াত। তিনি বলেন যে এমন একটা সম্ভাবনা আছে যে একযোগে হয়তো উত্তর ও পশ্চিম প্রান্তে হামলা চালাল চিন ও পাকিস্তান। তিনি বলেন দুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম ভারতীয় সেনা। এই সংক্রান্ত রণনীতি কি হবে তাও বলেন জেনারেল রাওয়াত। তিনি বলেন যে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ফ্রন্ট নির্ধারণ করা হবে। প্রসঙ্গত এদিনই সেনা প্রধান নারাভানে দুই দিনের সফরে লে-তে গিয়েছেন লাদাখ পরিস্থিতির রিভিড করতে।
ভারতীয় সেনা লাদাখে কিছুটা হলেও নিজেদের জায়গা বদল করেছে যাতে চিনের আগ্রাসন সহজেই রোখা যায় এলাকা দখল ঠেকানোর জন্য। প্যাংগং লেকের উত্তর প্রান্তেও সুবিধাজনক স্থানে এসেছে ভারত।
পাঁচদিন আগে মধ্যরাতে চিনের সেনাকে ভারতীয় অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করা থেকে বিরত করার পর থেকেই ফের নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে লাদাখে। প্যাংগংয়ের দক্ষিণেও এখন চাপা উত্তেজনা। বৃহস্পতিবার ফের এক রাউন্ড কথা হলেও তা বিফল হয়েছে কারণ দুই পক্ষই পিছু হটতে চায় না।
ভারত সম্পূর্ণ প্রকৃত সীমান্তরেখা বরাবর সেনা শক্তি বৃদ্ধি করেছে সম্ভাব্য চিনা আগ্রাসন রুখতে। অন্যদিকে পাক সীমান্তেও নজর রাখা হয়েছে। প্রাক্তন নর্থান আর্মি কম্য়ান্ডার ডিএস হুডা জানিয়েছেন যে পাকিস্তান ও চিন, একযোগে আক্রমণ করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা দিবসেও মোদী বলেন যে এলএসি থেকে এলওসি, ভারতের সার্বভৌমত্য ও অখণ্ডতার ওপর কেউ আঘাত আনতে গেলে যোগ্য় জবাব দেওয়া হবে। এদিন রাওয়াত বলেন যে চিনের সঙ্গে বোঝাপড়া আছে সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার জন্য। কিন্তু তারা সেটা মানছে না। তবে ভারত সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্পূর্ণ ভাবে সক্ষম বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। একই সঙ্গে বলেন যে তিব্বতে চিন কী কী প্রজেক্ট করছে তার ওপর নজর রাখা হচ্ছে ও সেই অনুযায়ী সামরিক রণকৌশল তৈরী করা হবে।
আমেরিকার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও ঘনিষ্ঠ বোঝাপড়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন বিপিন রাওয়াত। একই সঙ্গে প্রশংসা করেন চার দেশীয় কোয়াডের। তবে এদিনের বক্তব্যের মুল সুর ছিল পাকিস্তানকে এটা বুঝিয়ে দেওয়া যে চিনের সঙ্গে অস্থির সম্পর্ক মানেই এটা নয় যে পশ্চিম পড়শির ওপর থেকে নজর সরিয়ে নিয়েছে ভারত।