পথের কাঁটা সরিয়ে দিতে লিভ ইন পার্টনারের নাবালক সন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুন করল মহিলা। শুধু তাই নয়, খুন করার পর দেহ লুকিয়ে রাখল খাটের বাক্সে। ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির ইন্দারপুরির জেজে কলোনিতে। এই ঘটনায় ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত মহিলার নাম পূজা কুমারী। তার প্রেমিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ না করায় প্রতিশোধ নিতে প্রেমিকের নাবালক সন্তানকে খুন করেছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে গুলি করে খুন, থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করল স্বামী, আলোড়ন নারায়ণপুরে
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলার প্রেমিকের নাম জিতেন্দ্র। তাঁর নাবালক ছেলের নাম দিব্যাংশু (৯)। জিতেন্দ্র বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও পূজার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন। ক্রমেই তাদের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। এরপর ২০১৯ সালে পূজার সঙ্গে একটি মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেন জিতেন্দ্র। কিন্তু, পূজা চাইছিল তাদের রেজিস্ট্রি বিবাহ সম্পন্ন হোক। জিতেন্দ্র তাকে রেজিস্ট্রি বিয়ে করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। এদিকে, বিয়ের পর স্ত্রীকে ছেড়ে পূজার সঙ্গে থাকতে শুরু করে জিতেন্দ্র। কিন্তু, রেজিস্ট্রি বিবাহ নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে বচসা হতে শুরু করে। তাছাড়া স্ত্রীআরবিসঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ না করায় তাদের মধ্যে প্রতিদিন ঝামেলা লেগেই থাকত। তারপরেও স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করতে রাজি হননি জিতেন্দ্র। এরপর গত ডিসেম্বরে পূজাকে ছেড়ে স্ত্রীর কাছে চলে যান জিতেন্দ্র। সেখানে স্ত্রী এবং সন্তানের সঙ্গে জেজে কলোনিতে থাকতে শুরু করেন জিতেন্দ্র।
এরপর গত ১০ অগস্ট জিতেন্দ্রর বাড়িতে যায় পূজা। বাড়ির দরজা খোলা থাকায় সে ভিতরে ঢুকে পড়ে। সেখানে দেখতে পায় জিতেন্দ্রর ছেলে ঘুমিয়ে রয়েছে। এরপর ঘুমন্ত অবস্থাতেই দিব্যাংশুকে শ্বাসরোধ করে খুন করে পূজা। খুন করার পর তার দেহ খাটের বক্সের মধ্যে লুকিয়ে দেয় এবং সেখান থেকে পালিয়ে যায় পূজা। পরে কোনওভাবে জিতেন্দ্র তার ছেলেকে অচেতন অবস্থায় থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন জিতেন্দ্র। তার ভিত্তিতে এলাকার প্রায় ৩০০ টি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ পূজাকে শনাক্ত করে এবং তাকে গ্রেফতার করে। অবশেষে পুলিশি জেরার মুখে পড়ে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় পূজা। পুলিশকে সে জানিয়েছে, তার ধারণা ছিল ছেলের জন্য স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করতে চাইছিলেন না জিতেন্দ্র। তাই পথের কাঁটা সরাতে জিতেন্দ্রর নাবালক ছেলেকে সে খুন করেছে। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।