‘সারাটা জীবন কেন যে আমাকে এতটা আদরে রেখেছিল, কেন মেনে নিয়েছিল আমার সব আবদার? ওঁর পারফেকশনিস্ট মনোভাবটাই আমাকে কিছুতেই সাধারণে সন্তুষ্টি দেয় না!’, খোলা চিঠিতে এমনটাই লিখেছেন ইরফান পত্নী।
1/13 ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই থামিয়ে বুধবার না-ফেরা দেশে চলে গিয়েছেন ইরফান খান। কিন্তু ইরফানের স্মৃতি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছেন তাঁর পরিবার ও গুণমুগ্ধ ভক্তরা।গত দু বছর ধরে মারণরোগের সঙ্গে যখন লড়াই করেছেন ইরফান, সেই লড়াইয়ে সারাক্ষণ পাশে থেকেছেন তাঁর পত্নী। সেই লড়াই নিয়েই এবার মুখ খুললেন তাঁর স্ত্রী সুতপা শিকদার।
2/13 শুক্রবার ইরফান খানকে নিয়ে খোলা চিঠি লিখলেন তাঁর স্ত্রী এবং দুই পুত্র-বাবিল ও অয়ন। সেখানে ইরফান পত্নী জানান- ‘কী করে বলব আমি একাই সবটা হারিয়েছি,কারণ আমি জানি হাজারো মানুষ আমার এই শোকে শামিল। তারাও তো স্বজন হারানোর ব্যাথা পেয়েছে। আমার দুঃখে তারাও সমব্যাথী’। (ছবি-ফেসুবক)
3/13 ইরফানের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না সুতপা। স্ত্রীর কাছে এটা অবিশ্বাস্য আগামী দিনগুলো ইরফানকে ছাড়া বাঁচতে হবে। তবুও স্বামীর থেকেই শব্দ ধার করে তিনি চিঠিতে লিখেছেন ‘ইটস ম্যাজিক্যাল’। যে জাদুবলে ইরফান আজীবন তাঁর পাশে থাকবেন।
4/13 সুতপার কথায়, ইরফান যেভাবে তাঁকে বাঁচতে শিখিয়েছেন,সেভাবেই ভবিষ্যতের দিনগুলিতে চলবার চেষ্টা করবেন। হয়তো পারবেন না কিন্তু চেষ্টা করবেন, যাতে দুই সন্তানকে নিয়ে জীবনপথের এই নৌকো সঠিকভাবে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে। (ছবি-ফেসবুক)
6/13 'জীবনে সবকিছুর মধ্যে ও একটা ছন্দ খুঁজে নিত। যতই শ্রুতিকটূতা থাক কিংবা চিত্কার-ও একটা রিদম ঠিক খুঁজে পেত। আমিও ওর তালে তাল মেলাতে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছিলাম।আসলে আমাদের জীবনটা অভিনয়ের মাস্টারক্লাস। তাই আমাদের জীবনে যখন অযাচিত অতিথিরা এল তখনও আমি সেই বেসুরো তালে সাদৃশ্য খোঁজার চেষ্টা করেছি'। (ছবি-ফেসবুক)
7/13 তিনি আরও বলেন, ‘চিকিত্সকের প্রেসক্রিপশনটা আমার কাছে ছিল চিত্রনাট্য। আমি চেয়েছিলাম সেটা নিখুঁতভাবে মানতে। তাকে সুস্থ রাখতে কোনদিনও কিছুই মিস করিনি’। (ছবি-ইনস্টাগ্রাম)
8/13 সুতপা জানান, ‘শেষের দু’ থেকে আড়াই বছর আমার কাছে ছিল নাটকের মধ্যান্তরের মতো। যেখানে ইরফান চূড়ান্তভাবে অর্কেস্ট্রা বাজিয়ের ভূমিকায় পালন করছে। এই সময়টা আমাদের ৩৫ বছরের সম্পর্কের চেয়ে একেবারে আলাদা। আমাদের বিয়েটা আসলে বিয়ে নয়, ওটা আসলে ইউনিয়ান’। (ছবি-ফেসবুক)
9/13 ‘……আমার ছোট্ট পরিবারকে আমি একটা নৌকায় দেখতে পাই। দুই ছেলে বাবিল আর অয়ন বাবার পরামর্শ মেনে প্যাডেল করে সামনে এগিয়ে চলেছে। ইরফান বলছে ‘ওখান থেকে নয় এখান থেকে ঘোরো’। তবুও জানি এটা জীবন, সিনেমা নয়-এর কোনও রিটেক হয় না’। (ছবি-ফেসবুক)
11/13 বাবিল আমায় বলেছে, অনিশ্চয়তার হাতে নিজেকে সঁপে দিয়ে তার তালে কীভাবে তাল মেলাতে হয় এবং এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের প্রতি তোমার বিশ্বাসকে কী করে বাঁচিয়ে রাখতে হয়-সেটা ওর বাবা ওকে শিখিয়েছে।
12/13 'অয়ন বলল, বাবার কাছে ও শিখেছে মনকে নিজের কীভাবে আয়ত্তে রাখতে হয় সেই মন্ত্র। মনকে কোনওভাবেই তোমাকে আয়ত্তে আনতে দেওয়া চলবে না সেই কথা ইরফান বলেছে ওকে। (ছবি-টুইটার)
13/13 'চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়বে... আমরা যখন ইরফানের সবচেয়ে প্রিয় 'রাত কি রানি' গাছ লাগাবো যেখানে ইরফান শুয়ে আছে-যুদ্ধ জয়ের পর এক প্রশান্ত ঘুমে... সময় লাগবে জানি তবুও সেই গাছেও ফুল ফুটবে..গন্ধ ছড়িয়ে পড়বে। যে গন্ধ ছুঁয়ে যাবে সেই সকল মানুষের অন্তর আত্মাকে যাঁরা শুধু ওঁর অনুরাগী নয়, যাঁরা আমাদের পরিবার'। (ছবি-টুইটার)