মঙ্গলবার বুড়িরাম সিটি স্টেডিয়ামে একরাশ লজ্জায় ডুবে গিয়েছে ভারতের মহিলা অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দল। মঙ্গলবার তারা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা এশিয়ান কাপের কোয়ালিফায়ার রাউন্ড টু-র উদ্বোধনী ম্যাচে প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ০-৮ পরাস্ত হয়েছে। কোচ প্রিয়া পিভির মেয়েরা প্রতিযোগীতার সেরা দলগুলির মধ্যে শক্তিশালী কোরিয়ানদের কাছে একেবারেই ল্যাজেগোবরে হয়েছে।
কিন্তু স্টেডিয়ামে উপস্থিত কয়েক জন ভারতীয় সমর্থক নিজেদের হয়তো সান্ত্বনা দিতে পারেন এই ভেবে যে, ইয়াং টাইগ্রেসরা লড়াই করেছিল। তবে ধারেভারে কোরিয়া এতটাই এগিয়ে, সেই লড়াই ছিল কার্যত অসম। ভারত একেবারে পাত্তাই পায়নি।
বিরতিতে ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। সেটা তাও ভদ্রস্থ স্কোর ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে হয় বাকি হাফ ডজন গোল। স্পট কিক থেকে দু'টি গোল সহ হ্যাটট্রিক করে অধিনায়ক ওয়ান জুয়েন। যা ছিল ম্যাচের প্রধান আকর্ষণ। এছাড়া সেও মিনজেওং (২), পার্ক জুহা এবং পরিবর্তে নামা হান গুখি বাকি গোলগুলো করেছে। এছাড়া ভারতের শিবানী টপ্পো আত্মঘাতী গোল করে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে দেয়। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের (এআইএফএফ) প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের রক্ষণ যদি দুর্বলতা প্রদর্শন না করত, তবে হয়তো গল্পটি আরও ভালো হতে পারত।
তবে শুরু থেকেই কোরিয়া চাপে রেখেছিল ভারতকে। তাদের আক্রমণের ঝড়ে ভারতীয় রক্ষণ একেবারে কেঁপে গিয়েছিল। কোনও প্রতিরোধই তারা গড়ে তুলতে পারেনি। এর থেকেই প্রমাণিত ভারতীয় ফুটবল অন্য দেশগুলোর তুলনায় কতটা পিছিয়ে। কতটা উন্নতি প্রয়োজন তাদের।
এদিকে ভারতের প্রধান কোচ প্রিয়া পিভি নিজের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে জোর দিয়েছিলেন ঠিকই, তবে কোরিয়ার আক্রমণের কাছে ভারতের যাবতীয় স্ট্র্যাটেজি একেবারে ভেসে যায়। শক্তিশালী কোরিয়ার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ডিফেন্সিভ মানসিকতা নিয়ে খেলতে নেমেছিল ভারত। ভারত যত রক্ষণাত্মক হয়েছে, ততই আক্রমণের ঝড় তোলার সুবিধে পেয়েছে কোরিয়া।
ভারতের ডিফেন্স খুব বেশি হলে ১৩ মিনিট লড়াই করেছিল, তার পরে তাদের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ঝড়। ব্যাক থোইবিসানা চানুর মিসকিক থেকে প্রথম গোলের মুখ খোলে কোরিয়া। বক্সের প্রান্ত থেকে গোল করে এগিয়ে দেন পার্ক জুহা। ভারতীয় গোলরক্ষক খুশি কুমারীর কিছুই করার ছিল না।
ম্যাচের ২৮তম মিনিটে কোরিয়ার ওয়ান জুয়েনকে বাজে ভাবে পেনাল্টি বক্সের ভিতর ফাউল করে বসে সোনিবিয়া দেবী ইরোমকে। পেনাল্টি পায় কোরিয়া। জুয়েন গোল করতে কোনও ভুল করেননি। বিরতির পর বাকি ছয় গোল হয়। দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করে জুয়েনই। বিওম ইয়েজু থেকে থ্রু পাস ধরে ৩-০ করে জুয়েন। জুয়েবন তার হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে ৬৫তম মিনিটে। ভারতের খুশি কুমারীর পরিবর্তে গোলকিপার হিসেবে খাম্বি চানু সারংথেম নামর পরপরই। এই গোলের ১১ মিনিট পর পরিবর্তে নামা হান গুখি ৫-০ করে। এর পর সেও মিনজেওং আরও ২ গোল করে। আর শিবানীর আত্মঘাতীয় গোল তে রয়েছেই।
এমন নয় যে ভারতীয়রা কখনও-ই কোরিয়ান পাল্টা অ্যাটাকে ওঠেনি। হাফটাইমের দুই মিনিট আগে তাদের সেরা সুযোগটি পেয়েছিল। যখন স্ট্রাইকার সুলাঞ্জনা রাউল বাঁ-দিক থেকে বল কেড়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিল এবং কোরিয়ান কাস্টডিয়ানকে ডজ দিয়ে দ্রুত শট নিয়েছিল। তবে ওয়ান সুমিন শেষ মুহূর্তে তাদের দুর্গ রক্ষা করে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।