বহু বছর পর কোনও ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল ইস্টবেঙ্গল। আর সেই স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। শেষ বার সর্বভারতীয় কোনও ট্রফি লাল-হলুদে তাঁবুতে ঢুকেছিল সই ২০১২ সালে ট্রেভর মর্গ্যানের জমানায়। তার পর থেকে শুধু খরা। এই বছরের ডুরান্ড জিতে মরুভূমিতে এক ফোঁটা জলের আশা করেছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকেরা। কিন্তু ১১ বছরেও সেই আশা মরীচিকা হয়েই থেকে গেল। বাস্তবায়ন আর হল না।
রবিবার ডুরান্ড কাপের ফাইনালে মোহনবাগানের কাছে ১-০ গোলে হেরে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল কার্লেস কুয়াদ্রাতের দলকে। একটা সময় পর্যন্ত দুই দলের লড়াই সমানে সমানে চলছিল। কিন্তু অনিরুদ্ধ থাপা লালাকর্ড দেখার পরেও, ম্যাচের ৬৮ মিনিটে নামান লিস্টন কোলাসো, গ্লেন মার্টিন্স এবং জেসন কামিন্সকে নামিয়ে দেন জুয়ান ফেরান্দো। আর এই তিনটি পরিবর্তনই ম্যাচের রং বদলে দেয়। এই প্রসঙ্গে অবশ্য পাল্টা মোহনবাগানকেই খোঁচা দিয়েছেন লাল হলুদের স্প্যানিশ কোচ। কুয়াদ্রাত দাবি করেছেন, ‘একটা জিনিস ভেবে দেখুন। যে কোনও প্রতিযোগিতাতেই একটা নিয়ম থাকে। এখানে ৩০ জন ফুটবলারের রেজিস্ট্রেশন করানোর নিয়ম। কিন্তু ওরা ৩৪ জন ফুটবলারের রেজিস্ট্রেশন করিয়েছে। সবার জন্যে একটা নিয়ম, শুধু একটা দলের জন্যে আলাদা, এটা তো হতে পারে না।’
আরও পড়ুন: দিমির গোলে বাজল মোহন-বাঁশি, বদলা পূরণ করে ডুরান্ড কাপ জয় সবুজ-মেরুনের
তবে একই সঙ্গে দুই দলের ফুটবলারদের মানের যে পার্থক্য রয়েছে, সেটা সরাসরি না হলেও ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে স্বীকার করে নিয়েছেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। তবে ভাঙলেও মচকাবেন না মনোভাব লাল-হলুদ কোচের। যে কারণে সঙ্গে তিনি এও বলেছেন, ডুরান্ড ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছতে পেরে তিনি খুশি। কুয়াদ্রাতের সাফ কথা, ‘দল ফাইনালে পৌঁছেছিল, এতেই আমি খুশি। এই প্রতিযোগিতা থেকে অনেক কিছু ইতিবাচক পেলাম। ছেলেদের পারফরম্যান্সেও সন্তুষ্ট। ওরা লড়াই করেছে। যথেষ্ট ভালো খেলেছে। আমাদের পাশে থাকার জন্য সমর্থকদেরও ধন্যবাদ। আমরা সমর্থকদের জন্য ট্রফি জিততে চেয়েছিলাম। না পেরে খুবই হতাশ। পরবর্তীকালে ট্রফি জেতার চেষ্টা করব। তবে কোয়ালিটি অবশ্যই পার্থক্য গড়ে দেয়।’
আরও পড়ুন: দশ জনের বাগানের কাছেও হার ইস্টবেঙ্গলের, কোন ছকে বাজিমাত করলেন ফেরান্দো?
নিজেদের ভুলটা স্বীকার করে নিয়ে কুয়াদ্রাত বলেছেন, অনিরুদ্ধ থাপার লাল কার্ডটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে গিয়েছিল। তাঁর মতে, ‘ওদের কাছে প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। একজন ফুটবলার কমে যাওয়ায় ওদের হারানোর কিছু ছিল না। তাই আক্রমণ করা ছাড়া ওদের কাছে উপায় ছিল না। সেটাই করেছে। আমাদের সেই সময় নিজেদের আরও নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার ছিল। সেটা আমরা পারিনি। তবে এর থেকে ভবিষ্যতে শিক্ষা নিতে হবে।’
সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, ‘আমার মনে হয় শেষ বার ইস্টবেঙ্গল কোনও ট্রফি জিতেছে ২০১৯ সালে। তার আগে জাতীয় পর্যায়ের কোনও প্রতিযোগিতায় জিতেছে ২০১২ সালে। তা হলে এত দিন পরে যে একটা প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠতে পেরেছি আমরা এটাই গর্বের ব্যাপার নয় কি?’ এদিন কয়েকটা সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি নন্দকুমার। আগের ম্যাচে তাঁর অনবদ্য গোলেই ফাইনালে উঠেছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে তরুণ মিডফিল্ডারের ভূয়সী প্রশংসা করেন কুয়াদ্রাত। টুর্নামেন্টের সেরা বাছাও হয়েছে তাঁকে। কুয়াদ্রাত বলেছেন, ‘নন্দকুমার দারুণ। টপ ক্লাস। গোটা টুর্নামেন্টে ভালো খেলেছে।’
এদিকে ইস্টবেঙ্গলের কোচ জানিয়েছেন, ডিফেন্ডার জর্ডন এলসের চোট গুরুতর। তাঁকে সোমবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। স্ক্যানের পর বোঝা যাবে কত দিনের জন্যে ছিটকে গেলেন। যদি এই মরসুমে না খেলতে পারেন, তা হলে আর একজন বিদেশি ডিফেন্ডার নিতে পারে ইস্টবেঙ্গল।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।