এ যেন অনেকটা রুপকথার গল্প। ২২ গজে না জানি কত অঘটন ঘটে। তবে ৩৭ বছর বয়সেও দাপটের সঙ্গে প্রত্যার্তন? গল্প নয়, খাঁটি সত্যি। দীনেশ কার্তিক যে ভাবে ৩৭ বছর বয়সেও ভারতীয় দলে ফিরে এসেছেন, তাতে মুগ্ধ ক্রিকেট বিশ্ব। অনেকে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞই ভেবে নিয়েছিলেন যে, দীনেশের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ। কিন্তু সকলকে চমকে দিয়ে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করেছেন কার্তিক।
২০২২ আইপিএল জীবনটাই পাল্টে দিয়েছে ভারতীয় উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান দীনেশ কার্তিকের। মাঝে দীর্ঘ সময় ভারতীয় দলের বাইরে ছিলেন তিনি। কবে অবসর ঘোষণা করবেন ডিকে, সেই অপেক্ষাতেই ছিল ক্রিকেট মহল। ধারাভাষ্যকার হিসেবেও কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন কার্তিক। তার পরেই আইপিএল ২০২২-এ আরসিবির হয়ে একাধিক ম্যাচ উইনিং ইনিংস তাঁকে ফিরিয়ে আনে ক্রিকেটের মূল স্রোতে।
আরও পড়ুন: আতিথেয়তায় পাশ্চাত্যের দেশ নয়, ভারতই এগিয়ে- কোহলিদের অবহেলায় রেগে কাঁই সেহওয়াগ
আইপিএলের ভালো পারফরম্যান্সের সুবাদেই ভারতীয় দলেও কামব্যাক করেন কার্তিক। সীমিত সুযোগে নিজেকে প্রমাণও করেন। ২০০৭ সালে ভারতের প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ী দলে ছিলেন ডিকে। তার পর ১৫ বছরের ব্যবধান। ফের একবার বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পেয়েছেন কার্তিক।
প্রসঙ্গত ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কার্তিক হতাশই করেছেন। শেষ ওভারে ব্যাট করতে এসে তাড়াতাড়ি আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। তবে সিডনিতে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ম্যাচে কার্তিকের কামব্যাকের আশায় তাঁর বাবা কৃষ্ণ কুমার। তিনি ইতিমধ্যেই সিডনি পৌঁছে গিয়েছেন।
ছেলের লড়াকু প্রত্যাবর্তনে উচ্ছ্বসিত কৃষ্ণ কুমার। আবেগপ্রবণ পিতা বলছিলেন, ‘লোকে বলে, এমএস ধোনি এসেছিলেন এবং ডিকে -কে সরে যেতে হয়েছিল। আসলে ঈশ্বর ওর জন্য অন্য কিছু লিখে রেখেছিলেন। ও আরও কঠোর পরিশ্রম করতে চেয়েছিল। আজ পর্যন্ত ও কাউকে নিয়ে বাজে কথা বলেননি। বরং সবার প্রশংসা করে থাকে।’
আরও পড়ুন: আয়ারল্যান্ড-ইংল্যান্ড ম্যাচের দশা হবে না তো? আবহাওয়াকেই যত ভয় রোহিতদের
দীনেশ কার্তিকের বাবা আরও বলেন, ‘ওর জীবন বদলে যায়, যখন অভিষেক নায়ার। নায়ার ওকে রাত ২টোয় উঠিয়ে পাহাড়ের উপর দিয়ে দৌড়তে বাধ্য করেছিল। নায়ার কার্তিকের জন্য অনুশীলনের সেশন তৈরি করে এবং ও একজন টেনিস খেলোয়াড়ের মতো প্র্যাক্টিস করাতে থাকে। একজন পাওয়ার-হিটিং কোচ, আরএক্স মুরলিকে নিয়োগ করা হয়েছিল। একটি দল যারা নিয়ে ফিটনেস কাজ করে, তার সঙ্গেও কথা বলে।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কার্তিক খেলছেন। সেটা দেখার জন্যই এসেছেন তাঁর বাবা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচটি দেখতে পাননি তিনি। সেই সময় অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার অবশ্যই দর্শকাসনে দেখা যাবে কৃষ্ণকে। সিডনিতে এসেই অনুশীলন দেখতেই হাজির হয়ে গিয়েছিলেন কার্তিকের বাবা। ছেলের ছবি তুলতে ক্যামেরা অন করেছিলেন কৃষ্ণ। সঙ্গে সঙ্গে বাধা দেওয়া হয় তাঁকে। ছবি তোলার নিয়ম নেই শুনে ফোন রেখে দেন।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কৃষ্ণ বলেন, ‘জানি না এই বিশ্বকাপই ভারতীয় দলের হয়ে ওর শেষ খেলা, না কি আরও খেলবে। ৩৭ বছর বয়সে যে ও খেলছে সেটাই আমার কাছে খুব আশ্চর্যের। পরের বছর এক দিনের বিশ্বকাপে যদি ও খেলে, সেটা আমাদের কাছে অতিরিক্ত পাওয়া হবে। আমি খুব বাস্তববাদী। তাই জানি, এই বিশ্বকাপের পর কী হবে। সেই কারণেই বিশ্বকাপে ওর খেলা দেখতে অস্ট্রেলিয়া চলে এসেছি।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।