যে দল ওডিআই বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ার টপকাতে পারেনি। যাদের ক্রিকেট বিশ্বের ছোট ছোট দলগুলি আনায়াসে হারিয়েছে, সেই দলের কাছে ভারত বারবার ল্যাজেগোবরে হচ্ছে। রবিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও হারল ভারত। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে রান তাড়া করতে গিয়ে হারেন হার্দিক পান্ডিয়ারা। আর এদিন হারলেন প্রথমে ব্যাট করে। ২০১১ সালের পর এই প্রথম বার ভারতের বিরুদ্ধে পুরুষদের আন্তর্জাতিকে পরপর দুই ম্যাচ জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতার জেরেই পরপর দুই ম্যাচে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এক নম্বর দল হারল সাত নম্বরে থাকা দলের বিরুদ্ধে। যে দলে এক নম্বর টি-টোয়েন্টি ব্যাটার সূর্যকুমার যাদব রয়েছেন, দুই নম্বর আলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া রয়েছেন, সেই দলের এমন পরিণতি! পরপর দুই ম্যাচে মুখ থুবড়ে পড়াটা ভারতের কাছে নিঃসন্দেহে বড় লজ্জার।
রবিবার টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন হার্দিক। তিলক বর্মা ছাড়া বাকি ভারতীয় ব্যাটাররা রীতিমতো হতাশ করলেন। শুভমান গিল (৭) এবং সূর্যকুমার যাদব (১) ইনিংসের শুরুতেই পুরো ল্যাজেগোবরে হন। ইশান কিষান এবং তিলক বর্মা এর পর তৃতীয় উইকেটে ৪২ রানের জুটি গড়েন। তবে ইশান ২৭ করে আউট হয়ে গেলে, ক্রিজে আসেন সঞ্জু স্যামসন। সঞ্জুও এদিন নিরাশ করলেন। যাঁর কাঁধে নিজেকে প্রমাণ করার গুরু দায়িত্ব, তিনি এই সুযোগ কাজে না লাগিয়ে মাত্র ৭ রান করে দায়িত্বজ্ঞানহীন ভাবেই স্টাম্প আউট হয়ে বসে থাকলেন।
এর পর হার্দিক পান্ডিয়া নামার পর তিলক বর্মা নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন। ১টি ছক্কা এবং পাঁচটি চারের সাহায্য তিলক ৪১ বলে ৫১ রান করেন। ৩৯ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন তিলক। ২৪ করেছেন হার্দিক পান্ডিয়া। ১৪ রান করেন অক্ষর প্যাটেল। অক্ষরকে দিয়ে বল করানো হয়নি। ব্যাটেও তিনি ব্যর্থ। ফলে তাঁর ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এর বাইরে বাকিরা কেউ দুই অঙ্কের ঘরেই পৌঁছতেই পারেননি। ভারত ৭ উইকেটে ১৫২ রান করে। উইন্ডিজের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আকিল হোসেন, আলজারি জোসেফ এবং রোমারিও শেফার্ড।
আরও পড়ুন: হাফসেঞ্চুরি করে সূর্যের রেকর্ড ভাঙলেন তিলক, অল্পের জন্য ছোঁয়া হল না রোহিতের নজির
১৫৩ রান তাড়া করতে নেমে ৭ বল বাকি থাকতেই ২ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অথচ ভারত অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া বোলিং ওপেন করার দায়িত্ব নিজেই তুলে নিয়েছিলেন। এবং প্রথম ওভারেই ২ উইকেট তুলে নিয়ে উইন্ডিজকে বড় ধাক্কা দেন। প্রথম বলেই ভারতকে তিনি সাফল্য এনে দেন। হার্দিকের বলে দুরন্ত ক্যাচ ধরেন সূর্যকুমার যাদব। ব্রেন্ডন কিং গোল্ডেন ডাক করে সাজঘরে ফেরেন। এর পর এই ওভারের চতুর্থ বলে জনসন চার্লসকেও ফেরান হার্দিক। ২ রান করে আউট হন চার্লস। শুরুতে হার্দিক ধাক্কা দিলেও সেটা কাজে আসেনি। এমন কী কাইল মেয়ার্স ৭ বলে ১৫ করে সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন। ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল উইন্ডিজ। তবে চারে ব্যাট করতে নেমে নিকোলাস পুরান দলের হাল ধরেন। ৪০ বলে ৬৭ রান করেন তিনি। তাঁর এই ইনিংসই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। পুরানের ইনিংসে ছিল ৬টি চার এবং চারটি ছয়।
এছাড়া ১৯ বলে ২১ করেন রোভম্যান পাওয়েল। শিমরন হেতমায়ের করেন ২২ বলে ২২ রান। শেষ পর্যন্ত আকিল হোসেন (১০ বলে অপরাজিত ১৬ রান) এবং আলজারি জোসেফ (৮ বলে অপরাজিত ১০ রান) মিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ভারতের হয়ে হার্দিক ৩ উইকেট আর যুজবেন্দ্র চাহাল ২ উইকেট তুলে নিলেও, ম্যাচ জেতাতে পারলেন না তাঁরা। আর্শদীপ সিং এবং মুকেশ কুমার একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।