চতুর্থ দিনেও বারবার বৃষ্টি ব্যাঘাত ঘটাল খেলায়। গোটা দিনে মোট ৬৪ ওভার খেলা হল। বাকিটা বৃষ্টিতে গেল ধুয়ে। আর বৃষ্টি মাথায় নিয়েও ম্যাচ জিততে মরিয়া টিম ইন্ডিয়া। যদিও চতুর্থ দিনে ভারত কিন্তু মরিয়া হয়ে লড়াই করেছে ম্যাচ জেতার জন্য। প্রথমে পেসারদের দাপটে অলআউট হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত রান করে অনন্য রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন ভারতীয় ব্যাটাররা।
নূন্যতম কুড়ি ওভার খেলা দল হিসেবে সাতের উপর রানরেট রেখে নজির গড়েছে মেন ইন ব্লু। রবিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান করে ডিক্লেয়ার করে দেয়। অর্থাৎ গড় ছিল ৭.৫৪। ভারতীয় ব্যাটাররা কার্যত ব্যাজবল ক্রিকেট খেলেন এদিন। এবং দ্রুত রান তোলার লক্ষ্যে তারা ক্যারিবিয়ানদের রীতিমতো পিটিয়ে ছাতু করেন। টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলেই বড় নজির গড়ে ফেলল টিম ইন্ডিয়া। টেস্ট ক্রিকেটের এক ইনিংসে অনন্ত ২০ ওভার খেলা দলগুলির মধ্যে ভারতের গড় সবচেয়ে বেশি। ৭.৫৪ গড়ে ভারত রান তুলেছে। নূন্যতম ২০ ওভার খেলা কোনও দল কখনও এর আগে এত বেশি গড়ে রান করেনি। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া ৭.৫৩ গড়ে রান করেছিল। তারা ২ উইকেটে ৭.৫৩ গড়ে ২৪১ রান করে ডিক্লেয়ার করেছিল। সেই নজির ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ল রোহিত শর্মার ভারতীয় দল।
নূন্যতম দশ ওভার খেলা দলগুলির মধ্যে অবশ্যে গড়ের নিরিখে ভারত দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এই তালিকায় পাকিস্তান রয়েছে শীর্ষে। তারা ২০১৫ সালে শ্রীলঙ্কা বিরুদ্ধে ৮.১১ গড়ে কোনও উইকেট না হারিয়ে ৯২ রান করেছিল। এই তালিকায় দুইয়ে রয়েছে ভারত। তিনে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। চারে রয়েছে টিম ইন্ডিয়াই। ১৯৮৫ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দল ৭.৪৬ গড়ে ১ উইকেটে ৯৭ রান করে ডিক্লেয়ার করেছিল। আর ২০২২ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড ব্যাজবল খেলে ৭.৩৬ গড়ে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান করে ডিক্লেয়ার করছিল।
তৃতীয় দিনের শেষে পাঁচ উইকেটে ২২৯ রান ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। চতুর্থ দিন মাত্র ৭.৪ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাকি পাঁচ উইকেট ফেলে দেন ভারতীয় পেসারেরা। প্রথমে মুকেশ কুমার আউট করেন অলিক অ্যাথানেজকে। পরের চারটি উইকেট তুলে নেন সিরাজ। মাত্র ২৬ রানের মধ্যে বাকি ৫ উইকেট হারিয়ে বসে থাকে উইন্ডিজ। ২৫৫ রানেই তারা অলআউট হয়ে যায়। প্রথম ইনিংসে ১৮৩ রানের লিড পায় ভারত।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামলে প্রথমে রোহিত শর্মা এবং যশস্বী মিলে মারার মেজাজেই ছিলেন। কারণ রোহিতের মাথায় চলছিল, যে ভাবে বারবার বৃষ্টি হয়ে খেলা বন্ধ হচ্ছে, তাতে চতুর্থ ইনিংসে বোলাররা পর্যাপ্ত সময় না পেলে ১০ উইকেট ফেলতে পারবেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজের। যে কারণে শুরু থেকে টি-টোয়েন্টির মেজাজে ছিলেন রোহিত শর্মা এবং যশস্বী জয়সওয়াল। রোহিত ৪৪ বলে ৫৭ করে আউট হন। ৩০ বলে ৩৮ করেন যশস্বী। শুভমন গিল অবশ্য ৩৭ বলে ২৯ করে অপরাজিত থাকেন। তবে ইশান কিষাণ ৩৪ বলে ঝোড়ো ৫২ করে অপরাজিত থাকেন। ভারত ২ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রানেই ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে দেয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ৩৬৫ রানের লক্ষ্য দেয় ভারত।
এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামলে ভারত ৭৬ রানে ২ উইকেটে ফেলে দিয়েছে তাদের। ২৮ রান করে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে সুইপ মারতে গিয়ে আউট হন অধিনায়ক ব্রেথওয়েট। তিনে ব্যাট করতে নামা কির্ক ম্যাকেঞ্জি রান পাননি। শূন্য রানে তাঁকে ফেরান অশ্বিন। চন্দ্রপল ২৪ ও ব্ল্য়াকউড ২০ রানে অপরাজিত রয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে করতে হবে আরও ২৮৯ রান। ভারতকে নিতে হবে ৮ উইকেট। বৃষ্টিতে পঞ্চম দিনের খেলা ভেসে গেলে আর কিছু করার নেই।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।