রবিবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম জন্ম হল নতুন এক তারকার। ২৫ বছরের তরুণ দেখিয়ে দিলেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে না খেলেও নার্ভ ধরে রেখে কী ভাবে দলকে ম্যাচ জেতানো যায়। পরে ব্যাট করতে নেমে লখনউ সুপার জায়ান্টসের শেষ ওভারে ১৫ রান দরকার ছিল। সেই ওভারে অনামী কুলদীপ সেনকে বল তুলে দেন সঞ্জু স্যামসন।
তবে সকলকে অবার করে সেই ওভারে নিজেকে শান্ত রেখে দুরন্ত বোলিং করেন কুলদীপ। কারণ সেই সময়ে উল্টোদিকে ১২ বলে ২৮ রান করে রীতিমতো বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিলেন অজি অলরাউন্ডার মার্কাস স্টোইনিস। মারকুটে স্টোইনিসকে সামনে পেয়েও ঘাবড়ে যাননি কুলদীপ। বরং নার্ভ ধরে রেখেছিলেন তিনি। তাঁর নির্বিকার বডি ল্যাঙ্গোয়েজেই পাল্টা চাপে পড়ে যায় স্টোইনিস। ১-০-০-০- প্রথম চার বলে কুলদীপ রান দেন। শেষ দুই বলে ৪ এবং ছক্কা হাঁকিয়েও আর কোনও লাভ হয়নি। কারণ ততক্ষণে ম্যাচ হাত থেকে বের হয়ে গিয়েছে।
১৯তম ওভারে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ দু’টি ছক্কা ও একটি চার-সহ ১৯ রান দিয়েছিলেন। তবে শেষ ওভারে রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক ভরসা রাখেন মধ্যপ্রদেশের পেসার কুলদীপ সেনের উপর। তখন ধারাভাষ্যতে রবি শাস্ত্রী, মহম্মদ কাইফরা বলছিলেন, বিশাল বড় চাপের মুখে পড়তে চলেছেন ২৫ বছরের তরুণ। কিন্তু নিজে চাপে না পড়ে, কুলদীপ বরং চাপ বাড়িয়ে দেন স্টোইনিসের।
কেন হঠাৎ করে কুলদীপকেই শেষ ওভারে বলের জন্য বেছে নিয়েছিলেন সঞ্জু? এর উত্তরে রাজস্থানের অধিনায়ক বলেন, ‘ও ওর প্রথম তিন ওভার কী ভাবে বল করেছে, তার উপর নির্ভর করে। অনুভব করেছি যে, ও ভালো করছে এবং ও আত্মবিশ্বাসী (কুলদীপ সেন প্রসঙ্গে)। ওর ওয়াইড ইয়র্কার কাজে লাগাতে চেয়েছিলাম, যেটা নিয়ে ও অফ সিজনে কাজ করেছে। ওকে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে দেখেছি এবং ও ওর ওয়াইড ইয়র্কারেই বাজিমাত করেছে।’
ধারাভাষ্য দেওয়ার সময়ে কুলদীপের এই পারফরম্যান্স দেখে মুগ্ধ মহম্মদ কাইফ তাঁর এক সময়ের সতীর্থ ইরফান পাঠানকে বলেন, ‘ছেলেটার বলের গতি ভালো। সঙ্গে মসৃণ ভাবে ইয়র্কার দিতে পারে। মাথাটাও চাপের মুখে ঠান্ডা রাখতে জানে। বেশ পরিণত বোলারের ছাপ রেখেছে কুলদীপ।’
রবিবার টসে জিতে রাজস্থান রয়্যালসকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের অধিনায়ক কেএল রাহুল। প্রথমে ব্যাট করে রাজস্থান ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান করে। শিমরন হেতমায়ের অপরাজিত ৩৬ বলে ৫৯ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন। দলকে তিনিই পৌঁছে দেন ১৬৬ রানের লক্ষ্যে। এ ছাড়া ২৯ বলে ২৯ রান করেছেন দেবদূত পাডিক্কাল। ২৩ বলে ২৮ করেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। অশ্বিন আবার এ দিন রিটায়ার্ড আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। আইপিএলের ইতিহাসে এমন ঘটনা প্রথম ঘটল।
লখনউয়ের জেসন হোল্ডার এবং কৃষ্ণাপ্পা গৌতম ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। আবেশ খান নিয়েছেন ১ উইকেট।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় লখনউ। প্রথম বলে সাজঘরে ফেরেন রাহুল। দলের ১ রানের মাথায় আউট হন কৃষ্ণাপ্পা গৌতম এবং ১৪ রানের মাথায় আউট হন জেসন হোল্ডার। তার পরেও কিন্তু উইকেট পড়তেই থেকেছে লখনউয়ের। তার মাঝেই কুইন্টন ডি'কক ৩২ বলে ৩৯ রান করেছিলেন। ২৪ বলে ২৫ রান করেছিলেন দীপক হুডা। ১৫ বলে ২২ করেন ক্রুনাল পাণ্ডিয়া। আটে নেমে ১৭ বলে ৩৮ রান করেন মার্কাস স্টোইনিস। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ম্যাচের শেষের দিকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেও ৩ রানে হেরে যায় লখনউ। ৮ উইকেট হারিয়ে তারা করে ১৬২ রান।
রাজস্থানের যুজবেন্দ্র চাহাল ৪ উইকেট নেন। ২ উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট। প্রসিধ কৃষ্ণ এবং কুলদীপ সেন ১টি করে উইকেট নিয়েছেন। মাত্র ৩ রানে ম্যাচটি জিতে যায় রাজস্থান রয়্যালস।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।