গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে জিততে শেষ ওভারে কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। হাতে ছিল মাত্র ৩ উইকেট। ক্রিজে ছিলেন রিঙ্কু সিং এবং উমেশ যাদব। বল করতে এসেছিলেন যশ দয়াল। প্রথম বলে স্ট্রাইকে ছিলেন উমেশ যাদব। তিনি ১ রান নেন। শেষ ৫ বলে নাইটদের দরকার ছিল ২৮ রান। এই পরিস্থিতিতে ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন বোধহয় দেখেননি অতি বড় নাইট সমর্থকও। কেকেআর-এর ডাগআউটও হাল ছেড়ে দিয়েছিল।
কিন্তু সবার সব হিসেব-অঙ্ক-সমীকরণ ঘেঁটে ‘ঘ’ করে দেন রিঙ্কু সিং। যশ দয়ালের শেষ পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা। অবিশ্বাস্য ঘটনা। একেবারে রোমহর্ষক পরিস্থিতি। অবিশ্বাস্য জয় নাইটদের। আইপিএলের অন্যতম সেরা বললে ভুল হবে না। আর এর পুরো কৃতিত্বই রিঙ্কু সিংয়ের।
শেষ বল পর্যন্ত ম্যাচ গড়াল। আর ৩ উইকেটে কেকেআর-কে তাদের দ্বিতীয় জয় এনে দিলেন বাঁ-হাতি ব্যাটার। আর এক ওভারে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়ে আন্দ্রে রাসেল, রবীন্দ্র জাদেজাদের পাশে জায়গা করে নিলেন রিঙ্কু। এর আগে এক ওভারে পাঁচটি ছয় মেরেছিলেন ক্রিস গেইল (রাহুল শর্মার ওভারে), রাহুল তেওয়াটিয়া (শেলডন কটরেলের ওভারে), রবীন্দ্র জাদেজা (হার্ষাল প্যাটেলের ওভারে), মার্কাস স্টোইনিস এবং জেসন হোল্ডার (শিবম মাভির ওভারে), রিঙ্কু সিং (যশ দয়ালের ওভারে)।
আরও পড়ুন: রাসেল, নারিন, শার্দুল- পরপর ৩ উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক রশিদের, তবে হিসেব বদলালেন রিঙ্কু
রিঙ্কু শেষ পর্যন্ত ২১ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ঝোড়ো ইনিংসে ছিল হাফ ডজন ছক্কা এবং একটি চার। রিঙ্কুর জন্যই নিঃসন্দেহে আইপিএলের ইতিহাসে এই ম্যাচটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। রিঙ্কু মনে করালেন কার্লোস ব্রেথওয়েটকে। একই ভাবে ইডেনে বেন স্টোকসের শেষ ওভারে পরপর ছয় মেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টি-২০ বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। এ দিন যেন তারই পুনরাবৃত্তি ঘটল।
এ দিন পেন্ডুলামের মতো একাধিক বার ম্যাচের পট পরিবর্তন হল। একটা সময় মনে হয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের সব লড়াই শেষ। গুজরাটের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে হারের মুখে পৌঁছে গিয়েছিল নাইটরা। সেটা অবশ্যই রশিদ খানের জন্য। আঙুলের ভেল্কিতে বদলে দিয়েছিলেন ম্যাচের রং।
আরও পড়ুন: চাহারের চোট নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা, ভুগছেন স্টোকসও, বিবৃতি দিল CSK
২০৪ রান তাড়া করতে নেমে ভেঙ্কটেশ আইয়ারের দুরন্ত ইনিংসে ভর করে ধীরে ধীরে এগোচ্ছিল নাইটরা। শেষ বল পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যাচ্ছিল। জয়ের জন্য তখনও প্রয়োজন ৫১ রান, হাতে ২৪ বল। টি-২০ ক্রিকেটে এই অঙ্ক আয়ত্তের মধ্যে। তখনও আন্দ্রে রাসেল, রিঙ্কু সিং, শার্দূল ঠাকুরের উইকেট হাতে রয়েছে। আগের ম্যাচে শেষের দু'জনের দাপটেই জিতেছিল কেকেআর।
কিন্তু ১৭তম ওভারের প্রথম তিন বলেই হ্যাটট্রিক রশিদের। পরপর ফেরান রাসেল, নারিন এবং শার্দুলকে। এর পরও যে রিঙ্কু ম্যাজিক বাকি ছিল, সেটা বোধহয় ক্রিকেট পণ্ডিতরাও ভাবেননি। এই জায়গা থেকেও হারা সম্ভব ভাবতেই পারেননি রশিদরাও। নয়তো শেষ ওভারের জন্য কেন রেখে দিলেন যশ দয়ালের মতো একজন আনকোড়া, অনভিজ্ঞ বোলারকে! যে কিনা নিজের প্রথম ওভার থেকেই অতিরিক্ত রান দিচ্ছেন। শেষপর্যন্ত ৪ ওভার বল করে ৬৯ রান দেন যশ। তার মধ্যে ৩১ রান আসে চূড়ান্ত ওভারে এখানেই গুজরাটের জেতা ম্যাচ ফস্কে যায়।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।