ব্রিজভূষণের গ্রেফতারের দাবিতে ফের যন্তর মন্তরে ধর্নায় সাক্ষী, বজরং, বিনেশরা

রবিবার দিল্লির কন্নট প্লেস থানায় ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়। কিন্তু পুলিশ এফআইআর দায়ের করতে চায়নি। এতেই ক্ষুব্ধ কুস্তিগিররা। সেই কারণেই তারা নতুন করে ধর্না শুরু করেন।

ফের ধর্নায় বসলেন বজরং, বিনেশ, সাক্ষীরা।

জাতীয় কুস্তির সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরন সিং-কে গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার যন্তর মন্তরে ফের ধর্নায় বসলেন সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়া, বিনেশ ফোগাটরা। প্রায় তিন মাস পর আবার ধর্নায় বসলেন দেশের নামী কুস্তিগিররা। তাঁরা দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধেও অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের দাবি, মহিলা কুস্তিগিরদের যৌন নির্যাতন করা হলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের করা হচ্ছে না।

রবিবার দিল্লির কন্নট প্লেস থানায় ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়। কিন্তু পুলিশ এফআইআর দায়ের করতে চায়নি। এতেই ক্ষুব্ধ কুস্তিগিররা। সেই কারণেই তারা নতুন করে ধর্না শুরু করেন। বিনেশ ফোগাট বলেন, ‘যত দিন না বিচার পাই আমরা এখানেই খাব এবং ঘুমবো। ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এবং বাকি আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি গত তিন মাস ধরে। কমিটির তরফেও কোনও উত্তর দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের ফোন ধরা হয় না। দেশের হয়ে এত পদক জিতেছি। তার পরেও আমাদের ক্যারিয়ার খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।’

সাক্ষী মালিক বলেন, ‘আমরা সেই রিপোর্ট চাই যেখানে মহিলা কুস্তিগিরদের বয়ান রয়েছে। সেটি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। এটা স্পর্শকাতর বিষয়, কারণ এর মধ্যে এক নাবালিকার অভিযোগও রয়েছে।’ বজরং পুনিয়ার দাবি আবার, ‘ব্রিজভূষণ গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে কোথাও নড়ছি না।’

ব্রিজভূষণ এখনও নিজের অপরাধ শিকার করেননি। ধর্নার খবর শুনে তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি, দিল্লিতে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। আমি বুঝতেই পারছি না কেন এই অভিযোগ করা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে বিনেশ অভিযোগ করেছে। কিন্তু তার আগে কি অন্য কোনও কুস্তিগির এই অভিযোগ তুলেছিল? কেউ এগিয়ে এসেছিল? হঠাৎ করে এখন কেন অভিযোগ উঠছে? সবটাই ষড়যন্ত্র। এই অপবাদ নিয়ে থাকা যায় না। দরকার পড়লে পদত্যাগ করব।’

কুস্তিগিররা প্রথমে এই বছরের জানুয়ারিতে যন্তর মন্তরে বিক্ষোভে বসেন, ব্রিজভূষণকে প্রধান কার্যালয় থেকে অপসারণ এবং ভারতের রেসলিং ফেডারেশন ভেঙে দেওয়ার দাবীতে। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কুস্তিগীরদের যৌন হয়রানি ও দুর্ব্যবহারের।

ব্রিজভূষণের শাস্তি এবং ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রশাসনের পরিবর্তন দাবি জানিয়ে নয়া দিল্লির যন্তর মন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন ভারতের প্রথম সারির কুস্তিগিররা। সেই অবস্থান বিক্ষোভে তাঁরা দাবি করেছিলেন, ফেডারেশন কর্তারা মহিলা কুস্তিগীরের সঙ্গে অশ্লীল ব্যবহার করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অভিযোগ করার জন্য বিনেশ ফোগাটকে নাকি খুনের হুমকিও দিয়েছিলেন ব্রিজভূষণ। সেই হুমকির জন্য মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যার কথাও নাকি ভেবেছিলেন বিনেশ।

বিনেশদের অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক অভিজ্ঞ বক্সার মেরি কমের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা পড়েছে। মেরি কমের কমিটির দাবি, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।