ঘড়ি তখন প্রায় রাত আটটা ছুঁইছুঁই। তারইমধ্যে মুখে ধুতির কোঁচা চাপা দিয়ে দিল্লিতে মুকুল রায়ের বাড়িতে হাজির হলেন সুনীল মণ্ডল। দু'জনের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ। তবে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরের প্রথম দিনেই মুকুলের বাড়িতে সুনীল যাওয়ায় জল্পনা থামছে না।
দিল্লিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনের পাশেই থাকেন মুকুল। অভিষেকের সেই ১৮৩, সাউথ অ্যাভিনিউয়ের বাসভবনেই উঠেছেন মমতা। তারইমধ্যে রাত আটটা নাগাদ মুকুল বাড়িতে ঢোকেন সুনীল। সংবাদমাধ্যমের নজর এড়াতে মুখ ঢেকেওছিলেন। মিনিট ১৫-এর মতো মুকুলের বাসভবনে ছিলেন। তারপর তড়িঘড়ি বেরিয়ে যান। মুকুলের সঙ্গে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, তা নিয়ে কোনও প্রশ্নের জবাব দেননি সুনীল। যিনি তৃণমূলের টিকিটে জেতা সাংসদপদ এখনও ছাড়েননি। দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁকে সাংসদপদ খারিজের জন্য লোকসভায় চিঠি দেয় তৃণমূল। সম্প্রতি লোকসভার সচিবালয়ের তরফে সুনীলকে নোটিশও পাঠানো হয়েছে।
তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূলে ফেরার তদ্বির করতেই সম্ভবত মুকুলের সঙ্গে দেখা করেছেন পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ। যিনি বিধানসভা ভোটের আগে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেন। তারপর থেকে বিভিন্ন বিষয়ে তৃণমূলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিতে থাকেন। তবে মমতার বিরুদ্ধে সরাসরি তেমন বিষোদগার করেননি। তা নিয়ে সেইসময় তাঁর উদ্দেশে কটাক্ষও উড়ে এসেছিল। সেইসব সামলেই অবশ্যই বিজেপিতে থেকে গিয়েছেন সুনীল। কিন্তু বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজয়ের পরই সুর বদলে ফেলেন সুনীল। ইতিউতি তৃণমূলে ফেরার ইঙ্গিত দেন। তারইমধ্যে মমতার দিল্লি সফরের দিনেই মুকুলের বাসভবনে সুনীলের যাওয়ার পর প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি তৃণমূলের ফেরার তদ্বির করতেই গিয়েছিলেন সুনীল? সেটা হলেও তৃণমূল কি তাঁকে দলে ফিরিয়ে নেবে?