হাড়হিম কাণ্ড পাথরপ্রতিমায়। বাড়ির ভিতরে ঢুকে আততায়ীরা দুই বোনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করল। রক্ত ভেসে যাচ্ছিল গোটা বাড়ি। শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে দুই বোনের খণ্ড বিখণ্ড দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পাথরপ্রতিমা ব্লকের ভোলাহাট থানার দিগম্বর পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গুরুদাসপুর এলাকায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ইতিমধ্যেই দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: ১০ বছর আগে দেরাদুনে বাঙালি দম্পতি খুন, মৃত্যুদণ্ড রদ করে বেকসুর খালাস হাইকোর্টের
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই বাড়িতে দুই বোন ছাড়া আর কেউ থাকতো না। মৃতারা পাঁচ বোন ও তিন ভাই। তবে আগেই তিন ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া তিন বোন বিবাহিত। তবে মৃত দুই বোন অবিবাহিতা ছিলেন। তারা দুই বোন মিলেই ওই বাড়িতে থাকতেন। মৃতদের মধ্যে এক বোনের নাম বিশা প্রামাণিক (৫৫) এবং অন্য বোনের নাম বাসন্তী প্রামাণিক (৪৫)।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে গ্রামের এক যুবক বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বারান্দায় রক্ত দেখতে পান। এরপর বাড়ির ভিতরে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে দুই বোনের কোপানো দেহ। খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। সেখানে ভিড় করেন গ্রামবাসীরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। সেই খবর পাওয়া মাত্রই সেখানে পৌঁছয় ভোলাহাট থানার পুলিশ। পরে পুলিশ দেহ দুটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। দুই বোনের শরীর একাধিকবার কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। সেক্ষেত্রে পুরনো শত্রুতা রয়েছে নাকি অন্য কোনও কারণে তাদের খুন করা হয়েছে? তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয়দের বক্তব্য, বাড়িতে পুরুষ না থাকার সুযোগে কেউ বা কারা বাড়ির ভেতরে ঢুকে দুই বোনকে ধরালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, তাদের এক জামাইবাবু মাঝেমধ্যেই বাড়িতে এসে খোঁজখবর নিতেন। তবে এদিন সকালে ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। পুলিশের অনুমান, প্রথমে তাদের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়। তারপরে কুপিয়ে খুন করা হয়। কার্যত রক্তে ভেসে যায় বারান্দা।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে লোহার রড ও কিছু জিনিসপত্র। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত করছে পুলিশ। জানা যায়, দুই বোনের অনেক সম্পত্তি রয়েছে। ফলে খুনের ঘটনায় জমি-জায়গা সংক্রান্ত কোনও বিবাদ জড়িয়ে আছে কি না তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। মৃতদের আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।