বাংলার হাজার হাজার মানুষের আধার আচমকাই নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার নোটিশের ছবিও (যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) ভাইরাল হয়েছে। এরই মাঝে রিপোর্টে দাবি করা হয়, আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার জেরে অনেকেই রেশন তুলতে পারছেন না। ব্যাঙ্কের কাজেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের জুথিহাটি গ্রামেরও বহু মানুষ এই সমস্যার মুখে পড়েছিলেন। এই আবহে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে রেশন ডিলারদের নয়া নির্দেশ দেওয়া হল। নির্দেশ অনুযায়ী, কারও আধার নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলেও রেশন পরিষেবা যেন অব্যাহত থাকে। উল্লেখ্য, বর্তমানে রেশন পরিষেবা পেতে আধারের সঙ্গে যুক্ত বায়োমেট্রিক খতিয়ে নেওয়া হয়। আঙুলের ছাপ মিললে তবেই মেলে রেশন। এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, 'পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে প্রশাসন। অবস্থা বুঝে ব্লক প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।' (আরও পড়ুন: আগেই হয়েছে দিন বদল, ১০০ দিনের টাকা নিয়ে আরও এক নয়া ঘোষণা রাজ্য সরকারের)
আরও পড়ুন: বদলেছে নিষেধাজ্ঞার দিনক্ষণ, পেটিএম ফাস্ট্যাগ কি তবে জারি থাকবে? জানাল RBI
উল্লেখ্য, প্রাথমিক ভাবে আধার কর্তৃপক্ষের সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছিল, আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার নোটিশটি ভুয়ো। তবে ক্রমেই আধার বাতিলের নোটিশ প্রাপকদের সংখ্যা বাড়ছে। এই আবহে এখন ইউআইডিএআই জানাচ্ছে, আধার বাতিলের নোটিশ পাঠানো হয়েছে তাদের অফিস থেকেই। যদিও সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত তারা নেয়নি। বর্তমানে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে কোনও সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পেতে হলে আধার থাকা বাধ্যতামূলক। তবে এরই মাঝে বাংলার বহু বাড়িতেই 'আধার নিষ্ক্রিয়' হওয়ার চিঠি (যদিও এর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) গিয়েছে। যার জেরে মাথায় হাত পড়েছে অনেকেরই। কিন্তু কেন এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই ধরনের চিঠি পাওয়া ব্যক্তিরা কী করবেন?
আরও পড়ুন: ১৬০ কিমি বেগে ছুটল বন্দে ভারত, আচমকাই সামনে লাল সিগন্যাল, ব্রেক কষলেন না চালক….
জানা যাচ্ছে, আধার নিষ্ক্রিয় হওয়া ব্যক্তিদের ভিড় ক্রমেই বাড়ছে কলকাতা এবং রাঁচির আধার কেন্দ্রে। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের আঞ্চলিক আধার কেন্দ্র রাঁচিতে অবস্থিত। এই আবহে আধার কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, এই নোটিশ তাদের অফিস থেকেই গিয়েছে। তবে এই নোটিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে 'অন্যত্র'। আধিকারিকদের তরফ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে এই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। এদিকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন এই বিষয়টি নিয়ে এই ধরনের গোপনীয়তা অবলম্বন করা হচ্ছে? তবে জানা যাচ্ছে, এই গোটা প্রক্রিয়াটি একবছর আগে শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকারও এই বিষয়ে অবগত বলে জানানো হয়েছে ইউআইডিএআই-এর তরফ থেকে। উক্ত নোটিশ অনুযায়ী, আধর আইনের ২৮এ ধারা অনুযায়ী আধার কার্ড বাতিল করা হয়েছে।
আধার আইনের এই ২৮এ ধারা কী? এই ধারা অনুযায়ী, যদি কোনও বিদেশি ভারতে থাকার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায় বা ভারতে তাঁর প্রবেশ কিংবা বসবাসের শর্ত পূরণ না হয়ে থাকে, তাহলে তাঁর আধার নিষ্ক্রিয় হতে পারে। এই আবহে মনে করা হচ্ছে, অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়ার জেরে এই সব ব্যক্তিদের আধার নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকতে পারে। বা আধার করানোর সময় হয়ত কেউ ভুয়ো নথি জমা দিয়েছিলেন। তবে বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই কারও।