যাদবপুরের ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। এরই মধ্যে মাস খানেক আগে বনহুগলির এনআইএলডি-তে ভিন রাজ্যের পড়ুয়ার মৃত্যুতে নতুন করে র্যাগিংয়ের অভিযোগ সামনে আসছে। এই ঘটনায় ৭ জন ছাত্র এবং ২ ছাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। প্রতিষ্ঠানের তদন্ত কমিটি তাদের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের সত্যতাও খুঁজে পেয়েছিল। কিন্তু, এতদিন কেটে যাওয়ার পরেও এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাছাড়া, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ করা হয়নি। এই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: বরানগরে ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ
বরানগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর লোকোমোটর ডিজঅ্যাবিলিটিজের ছাত্র প্রিয়রঞ্জন সিংয়ের রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছিল ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর। এই ঘটনায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে। পরে ছাত্রের পরিবারের তরফে এক ছাত্রী সহ মোট ৯ জন সিনিয়রের বিরুদ্ধে থানায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ দায়ের করে মৃত ছাত্রের পরিবার। দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র প্রিয়রঞ্জনকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁর বন্ধুরা তাঁকে কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান। কিন্তু, সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় প্রিয়রঞ্জনের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ করেন অন্যান্য ছাত্ররা। প্রিয়রঞ্জনের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়।
বিহারের গয়ার বাসিন্দা ওই ছাত্রের পরিবারের দাবি ছিল, তাঁকে বেশ কয়েকমাস থেকেই র্যাগিং করা হচ্ছিল। মৃত পড়ুয়ার দাদা প্রবীণ রঞ্জনের অভিযোগ, সিনিয়র রা প্রিয় রঞ্জনকে মারধর করত। সিঁড়ি না থাকা সত্ত্বেও ছাদে নিয়ে যেত। অন্যদিকে, এই ঘটনার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল এনআইএলডি কর্তৃপক্ষ। সেই কমিটি অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায়। এদিকে, প্রিয়রঞ্জনের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোট খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে সেটি ওই যুবকেরই লেখা। প্রথমে এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। পরে আত্মহত্যার মামলা রুজু করে পুলিশ। কিন্তু ঘটনার এতদিন কেটে যাওয়ার পরেও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
উল্লেখ্য, প্রিয়রঞ্জন ২০২১ সালে বরানগরের ওই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ ছিল, যেহেতু তাঁকে কিছু সিনিয়র ছাত্র র্যাগিং করেছিল তাই তাঁরা অ্যান্টি-র্যাগিং সেলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, তারপরেও র্যাগিং বন্ধ হয়নি। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে তিনি বাড়িতে জানিয়েছিলেন যে তিনি সেখানে পড়তে চান না।