উত্তরবঙ্গের হাতিরা অনেক ভদ্র। পরিবেশগত কারণে তারা অনেক শান্ত। এমনটাই শোনা যায় বন দফতরের কর্তাদের মুখে। দক্ষিণবঙ্গের মতো এতটা হিংস্র নয়। কিন্তু তার পরও দেখা যায়, ফসল নষ্ট করতে, মানুষ মারতে এবং গৃহস্থের বাড়ি ঢুকে খাবার সাবরে দিতে। এবারও এক হাতির পেল প্রবল ক্ষিদে। আর তার জেরে সে ঢুকে পড়ল একেবারে সেনা ছাউনিতে। সেখানে দুলকি চালে হেঁটে খাবারের সন্ধান করল। এমনকী পৌঁছে গেল সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তার দুয়ারে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ সেনা ছাউনির ভিতরে পূর্ণবয়স্ক এক গজরাজের আগমন কেমন করে ঘটল? এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ সেনা ছাউনিতে ঢোকার আগে নিরাপত্তারক্ষী থাকে। তিনি কি দেখতে পেলেন না? আর হাতিটি দুলকি চালে হেঁটে করিডর দিয়ে পৌঁছে গেল একেবারে উচ্চপদস্থ অফিসারদের দুয়ারে। যেখানে অফিসাররা এসে কাজ করেন। আজ, রবিবার সকালে এমনই ঘটনা ঘটেছে ব্যাঙডুবি সেনা ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে। যদিও বড় কোনও ক্ষতি করেনি দাঁতালটি। অনেকক্ষণ ঘোরাফেরা করে খাবার না পেয়ে আবার সে পাশের জঙ্গলে চলে যায়। এই ঘটনাটি নিয়ে বাগডোগরার কাছে ব্যাঙডুবি সেনা ছাউনিতে তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে দেখতে গেলে এই সেনা ছাউনি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে রয়েছে দলকা ফরেস্ট। এখানে বহু হাতির দল রয়েছে। তাছাড়া এখান থেকে অন্যত্র জঙ্গলেও যাতায়াত করে তারা। কখনও তারা লোকালয়েও ঢুকে পড়ে। তেমনই আজ খাবারের খোঁজে সেনা ছাউনিতে প্রবেশ করে। জঙ্গল ছেড়ে খাবারের খোঁজে এসেছিল হাতিটি বলেই মনে করা হচ্ছে। বড় রাস্তায় চলে আসে দাঁতাল হাতি। কখনও ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। টুকটাক কিছু খাবার পেলেও বড় কিছু মেলেনি। তাই খেয়ে আবার জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে হাতিটি বলেই খবর।
আরও পড়ুন: মৎস্যজীবীদের জালে উঠে এল বিশাল হাঙড়, দিঘায় দেদার সেলফি তুলল পর্যটকরা
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই ঘটনাটি দেখতে পান দু’একজন সেনা কর্মী। তাঁরা বিষয়টি দেখে নিজেরা নিরাপদ স্থানে সরে পড়েন বলেই সূত্রের খবর। তবে তাঁরা একটি ভিডিয়ো তুলে রাখেন। যা অফিসারদের পড়ে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে সেনা ছাউনির ভিতর হাতির প্রবেশ একেবারেই প্রথম ঘটনা। টানা আধঘণ্টা ধরে গজরাজ সেনা অফিসারদের অফিসের সামনে ঘোরাফেরা করে। খাবার তেমন কিছু না পেয়ে রাগের চোটে একটি সাইকেল ফেলে দেয়। এই ঘটনা দেখে তখন অফিস থেকে অনেকে ভয়ে অন্যত্র সরে পড়েন। তারপর নিজেই আবার জঙ্গলে ঢুকে যায়। এই ঘটনা নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল। বিষয়টি বন দফতরকে জানানো হয়েছে।