হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের। চাকরি পেয়ে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি করেছিলেন। কেউ আবার নিয়েছিলেন পার্সোনাল লোন। সেই লোন এখন তাঁরা কীভাবে শোধ করবেন তা ভাবাচ্ছে ব্যাঙ্কগুলিকে। এর মধ্যে যেমন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক রয়েছে। তেমনি রয়েছে জেলার বেশ কিছু সময়বায় ব্যাঙ্কও।
বর্তমানের প্রতিবেদন অনুযায়ী শুধুমাত্র জলপাইগুলির ধূপগুড়িতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেই চাকরি হারা শিক্ষকদের লোন প্রায় সাত কোটি টাকা। এই বিপুল অঙ্কের টাকা কীভাবে আদায় হয়ে তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে ব্যাঙ্কটি।
ব্যাঙ্কের শাখাগুলি ইতিমধ্যেই বিষয়টি তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার নীলাদ্রি ঘোষের কথা, ‘পার্সোনাল লোন, হোম লোন মিলিয়ে আমাদের শাখা থেকে সাত কোটি টাকার বেশি লোন দেওয়া হয়েছে। এই টাকা কী করে আদায় করব ভেবে পাচ্ছি না। আমরা বিষয়টি ব্যাঙ্কের উপর মহলের নজরে এনেছি।’
আরও পড়ুন। ২০১৬ প্যানেল বাতিলে বাংলার স্কুলগুলিতে কতটা শূন্যতা তৈরি হবে? বিস্ফোরক পরিসংখ্যান পর্ষদের
কপালে ভাঁজ সমবায় ব্যাঙ্কগুলিরও
লোন দিয়ে ফাঁপরে পড়েছে সমবায় ব্যাঙ্কগুলিও। তমলুক-ঘাটাল সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক আদালতের নির্দেশে চাকরিহারা বহু শিক্ষকদের লোন দিয়েছে। যেহেতু তাঁরা বেতনভুক সরকারি কর্মচারী তাই তাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে সহজেই হোম লোন পার্সোনাল লোন পেয়ে গিয়েছিলেন। সেই লোনের পরিমাণও কয়েক কোটি টাকা। সেই টাকা কীভাবে আদায় করা যাবে তা নিয়ে অথৈ জলে সমবায় ব্যাঙ্কটি।
তমলুক-ঘাটাল সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের সিইও হিরোজ মাইতি বর্তমানকে বলেছেন, ‘আমাদের ব্যাঙ্ক থেকে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকারা লোন নিয়েছেন। তাঁদের অনেকে ২০১৬ সালের পরীক্ষায় চাকরি পেয়েছিলেন। হাইকোর্টের রায়ের পর তাঁদের লোন আদায় নিয়ে চিন্তা বড়েছে। প্যানেলে নাম থাকা প্রকৃত ঋণগৃহীতার সংখ্যা খুঁজে বার করেছি। তাঁদের টাকার অঙ্কও বার করার চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন। একসঙ্গে ৩৬ শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে ফারাক্কার স্কুলে, পড়াশোনার কী হবে?
আদালতের রায়
বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ সবির রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। এসএসসি মামলায় রায়ে আদালত বলে , ২০১৬ সালে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দ্বাদশে নিয়োগ পাওয়া এসএসসি চাকরিপ্রাপকদের সবার চাকরি বাতিল হবে। মামলার পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত বলে, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের চাকরি বৈধ হতে পারে না। অন্যদিকে চাকরিহারাদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে সব বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রাপ্ত বেতনের ওপর ১২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে চাকরিহারাদের। এই অর্থ জেলাশাসকের কাছে জমা করতে হবে। জেলাশাসক পরবর্তী ২ সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা হাই কোর্টে জমা দেবেন।