এসএসসি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে চাকরি চলে গিয়েছে প্রায় ২৬ হাজার জনের। একসঙ্গে এতজনের চাকরি চলে যাওয়ায় চরম সমস্যার মধ্যে পড়েছে একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে অনেক স্কুলে একসঙ্গে অনেক শিক্ষকের চাকরি চলে গিয়েছে। ফলে কীভাবে স্কুল চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এমন ছবি দেখা গিয়েছে মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা ব্লকের ৭টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। যার মধ্যে মুর্শিদাবাদে ফারাক্কার অর্জুনপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা শোচনীয়। এই স্কুলে একসঙ্গে চাকরি চলে গিয়েছে ৩৬ জন শিক্ষকের। ফলে স্বাভাবিকভাবে স্কুল চালানো নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ২০১৬ প্যানেল বাতিলে স্কুলগুলিতে কতটা শূন্যতা তৈরি হবে? সামনে বিস্ফোরক পরিসংখ্যান
জানা যাচ্ছে, এই স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। এই স্কুলে মোট শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা ছিল ৬০ জন। এর মধ্যে ৭ জন পার্শ্বশিক্ষক। তবে ৩৬ জন শিক্ষক বাদ পড়ায় এখন এই স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২৪ জন। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ৩৬ জন শিক্ষকের মধ্যে সরাসরি নিয়োগ হয়েছিলেন ২০ জন এবং বদলি হয়ে এসেছিলেন ১৬ জন। ফলে এই অবস্থায় বাকি শিক্ষকদের নিয়ে স্কুলে পড়ানো মুশকিল বলেই মনে করছে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, গ্রামীণ এলাকায় অবস্থিত এই স্কুলে বাকি ২৪ জন শিক্ষকের পক্ষে ১০ হাজার পড়ুয়াকে সামাল দেওয়া খুবই মুশকিল। এতে স্কুলের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে।
শুধু এই স্কুলটিই নয় ফারাক্কা ব্লকের আরও বেশ কিছু স্কুলের একই দশা এখানকার নয়নসুখ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৯ জন শিক্ষক ও একজন গ্রুপ সি কর্মীর চাকরি চলে গিয়েছে। উল্লেখ্য, এই স্কুলে আগে ৫৫ জন শিক্ষক ছিল। এখন তা কমে গিয়ে ৩৬ জন দাঁড়িয়েছে। এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কয়েক হাজার। ফলে স্কুলের পঠনপাঠন ব্যাহত হবে বলেই মনে করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আবার আমতলা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৭ জন শিক্ষক ও একজন অশিক্ষক কর্মীর চাকরি চলে গিয়েছে। এছাড়া, ধর্মডাঙা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১১ জন, নিশিন্দ্রা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক ও একজন অশিক্ষক কর্মী এবং তিলডাঙা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫ জন চাকরি হারিয়েছেন। নিউ ফরাক্কা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়েও ১১ জন শিক্ষকের চাকরি চলে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, নিউ ফরাক্কা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ৩৫ জন। ফলে চলতি চলে যাওয়ায় এখন স্কুলটিতে ২৪ জন শিক্ষক থাকছেন। এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার। ফলে স্কুল কীভাবে চলবে তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।