আন্দোলনের চাপের মুখে পড়ে রাতারাতি বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে সাঁওতালি মাধ্যমে পঠনপাঠনের অনুমতি দিল উচ্চশিক্ষা দফতর। চলতি শিক্ষাবর্ষেই ৭টি বিষয়ে স্নাতকোত্তরে সাঁওতালি ভাষায় পঠনপাঠনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনের জেরেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বলে মনে করছে আদিবাসী সমাজের সংগঠনগুলি। বুধবার দিনভর আন্দোলন করে আদিবাসীদের সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’ ও সাঁওতালি মাধ্যমের পড়ুয়ারা। এরপরেই নড়েচড়ে বসে উচ্চশিক্ষা দফতর। তাঁদের দাবি মেনে রাতেই সাঁওতালি বিভাগে পঠনপাঠনের অনুমতি দেয় রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ
বুধবার দিনভর বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান আদিবাসীরা। আন্দোলনের জেরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জাতীয় সড়ক। এরপরেই উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারপরে উচ্চশিক্ষা দফতরে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় নথি পাঠিয়ে সাঁওতালি মাধ্যমে পঠনপাঠন চালু করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। শেষে এদিন সন্ধ্যার দিকে উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে এই অনুমতি দেওয়া হয়। এদিকে, সাঁওতালি মাধ্যমের অনুমতি দিতে দেরি হওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি মাধ্যমে পঠনপাঠনের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই। বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকে সাঁওতালি মাধ্যমে পঠনপাঠন চালু হলেও স্নাতকোত্তরে তা ছিল না। পড়ুয়াদের আশা ছিল চলতি শিক্ষা বর্ষ থেকেই স্নাতকোত্তরে সাঁওতালি মাধ্যমে পঠনপাঠন চালু করা হবে। ফলে তারা পঠনপাঠনের সুযোগ পাবেন। কিন্তু তেমনটা হয়নি। সাঁওতালি মাধ্যমের পড়ুয়াদের স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। এর ফলে ব্যাপক সমস্যায় পড়ে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা বিভিন্ন কলেজ থেকে সাঁওতালি মাধ্যমে স্নাতক উত্তীর্ণ প্রায় ২০০ পড়ুয়া। বিষয়টি বারবার বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়েও কোনও লাভ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বুধবার আন্দোলন শুরু করেন সাঁওতালি মাধ্যমের পড়ুয়ারা। এসএফআই–এর দাবি, রাজ্য সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যৌথ গাফিলাতিতেই অনুমোদন আটকে ছিল । তবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এই ঘটনার যাবতীয় দায় চাপিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার অবশ্য এর জন্য তোপ দেগেছেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই। সংগঠনের পক্ষ থেকে বাবুনাথ টুডু জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতির কারণে এই অনুমতি আটকে ছিল।