তুমুল বচসা, হই-হট্টগোল- তারপরও সন্দেশখালিতে যেতে পারল না বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। রামপুর থেকেই কলকাতায় ফিরে এসে রাজভবনে ঢুকলেন অগ্নিমিত্রা পাল-সহ বিজেপির প্রতিনিধিরা। তারইমধ্যে সেই প্রতিনিধি দলের সদস্য তথা হরিয়ানার সিরসার সাংসদ সুনীতা দুগ্গল অভিযোগ করেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি যে (আমাদের সঙ্গে যে মহিলারা কথা বলেছেন, তাঁদের উপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ)। এরকম প্রতিটি ঘটনার রিপোর্ট আমরা মহামহিমকে দেব। আমরা শুনতে পেলাম, যে মহিলারা ভিডিয়ো কলে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁদের এখন মারধর করছে পুলিশ।' যদিও বিষয়টি নিয়ে পুলিশের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
শুক্রবার সকালের সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক-সহ বিজেপির প্রতিনিধিরা। কিন্তু ১৪৪ ধারার নির্দেশিকা দর্শিয়ে রামপুরে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। তার জেরে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন অগ্নিমিত্রিরা। তাঁরা প্রস্তাব দেন যে পাঁচজনকে যেতে দেওয়া হোক। তাতেও পুলিশ রাজি হয়নি বলে অভিযোগ। তাঁরা দাবি করেন, মাত্র দু'জন সদস্যকে যেতে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও রাজি হয়নি পুলিশ।
সেই পরিস্থিতিতে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন অগ্নিমিত্রারা। যে মহিলা পুলিশ অফিসারদের মোতায়েন করা হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপির প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। ধাক্কাধাক্কি হয় পুলিশের সঙ্গে। কিন্তু কোনওমতেই বিজেপির প্রতিনিধি দলকে ঢুকতে দিতে রাজি হয়নি পুলিশ। সেই পরিস্থিতিতে রামপুর থেকে ফিরে আসেন অগ্নিমিত্রারা। সেখান থেকে তাঁরা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করতে রাজভবনে চলে আসেন।
উল্লেখ্য, রেশন দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) অভিযানের পরে সন্দেশখালির ছবিটা পুরোপুরি পালটে গিয়েছে। তৃণমূল শাহজাহান ও তাঁর শাগরেদ শিবপ্রসাদ হাজরার দলবলের বিরুদ্ধে তুমুল বিক্ষোভে সরব হন স্থানীয় মানুষ। যে বিক্ষোভে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন মহিলারা। একাধিক মহিলা শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন। তাঁরা দাবি করেন যে ‘সুন্দরী’ মেয়েদের ‘আলাদা’ চোখে দেখত শিবুর দলবল। সভা থাকার নাম করে রাত ১২টার পরে ডেকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছে। সেই বিষয়টি সরব হয়েছে বিরোধীরা।