বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লক্ষ্য করে বিজেপির ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান নিয়ে বিতর্কের পারদ ক্রমেই চড়ছে। এবার এ নিয়ে বিজেপির মধ্যে মতভেদ প্রকাশ্যে এল। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দলের বিধায়ক, সংসদদের এমন স্লোগানকে সমর্থন করলেন না বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিং অহলুওয়ালিয়া।
বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দেওয়াই উচিত ছিল।’ অর্থাৎ তাঁর মতে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দেওয়া উচিত হয়নি। যদিও মমতাকে লক্ষ্য করে জয় শ্রীরাম শ্লোগানকে একের পর এক সমর্থন জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের মতো নেতা এই স্লোগানকে সমর্থন জানিয়েছেন। দিলীপ ঘোষ বলেছেল, ‘মমতা ইংরেজদের মতো আচরণ করছেন। ইংরেজরা বন্দে মাতরম শ্লোগান নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল। তেমনি মমতা পারলেও বিল পাশ করিয়ে জয় শ্রীরাম স্লোগান নিষিদ্ধ করে দিক।’ উদ্বোধনী মঞ্চে দেখা যায়, জয় শ্রীরাম স্লোগান উঠার পরে বিরক্ত হন মমতা। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও অনেক অনুরোধ করে এই শ্লোগান থামাতে পারেননি। এমনকী মমতার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়েছেন রেলমন্ত্রী। কিন্তু, তারপরে মূল মঞ্চে ওঠেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। অনেক তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন বন্দে ভারতের উদ্বোধনী মঞ্চে বিজেপির জয় শ্রীরাম স্লোগান পূর্ব পরিকল্পিত ছিল।
শুভেন্দুর বক্তব্য ছিল, ‘জয় শ্রীরাম শ্লোগান নিয়ে মমতার আপত্তি থাকার মূল কারণ নয়, তাঁর মূল কারণ ছিল তিনি আমার সঙ্গে একই মঞ্চে ছিলেন। কারণ আমি তাঁকে নন্দীগ্রামে হারিয়েছি।’ সেই পথে হেঁটেই বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় শুভেন্দুর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তবে সুরেন্দ্র সিং অবশ্য উলটো পথে হেঁটেছেন। এই অবস্থায় তাঁর মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। উল্লেখ, সুরেন্দ্র আগে কংগ্রেসে ছিলেন পরে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন। এরই মধ্যে ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে বিজেপির শোচনীয় হারের পর সুরেন্দ্রর তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা ওঠে। যদিও তিনি বিজেপিতেই এখনও রয়েছেন।