'যত বেশি লোক একসঙ্গে থাকবে, (তত) করোনা হবে। আর সরকার ফাঁসবে।' ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকে ফেলতে নাকি এমনই পরিকল্পনা করছে বিজেপি। ভাইরাল হওয়া একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের চ্যাট (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) তুলে ধরে এমনই অভিযোগ তুলল তৃণমূল কংগ্রেস।
ভাইরাল হওয়া সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের চ্যাটের স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ‘বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী প্রেসিডেন্ট’ (বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি হলেন বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী) নামে একজন লিখেছেন, ‘সবথেকে ভালো হবে, বেশি করে লোক স্কুলগুলিতে ঢুকিয়ে দাও আর সবাইকে বলে দাও যে সবাই ঘর পাবে। যত বেশি লোক একসঙ্গে থাকবে, (তত) করোনা হবে, আর সরকার ফাঁসবে। প্রতিটি অঞ্চলে খবর দিয়ে দাও।’ সেই মেসেজের জবাবে ‘জ্যোতির্ময় দা এমপি (সাংসদ)’ (পুরুলিয়ার সাংসদ হলেন জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো) নামে একজন লেখেন, ‘ আপনি বলে দিন। সেন্ট্রালকে বলে আমি মিডিয়াতে দিয়ে দেব। আমাদের কর্মীদেরকে বলতে হবে বেশি করে ফটো ভিডিয়ো করে।’ একজন সেই প্রস্তাবের বিরোধিতা করলেও 'জয়পুর নরহরি দা' (জয়পুরের বিধায়ক হলেন নরহরি মাহাতো) নামে একজন লেখেন, 'ওরা রাজনীতি করে, আমরাও করব। ভালো সিদ্ধান্ত বিবেক এবং বিদ্যাসাগর।'
সেই হোয়্যাটসঅ্য়াপ চ্যাটের স্ক্রিনশট ফেসবুকে পোস্ট করে আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্য তৃণমূলের মুূখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘এটা বিজেপির পুরুলিয়া জেলার কোর কমিটির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। পুরুলিয়া জেলায় যাঁরা থাকেন, এই গ্রুপে উপস্থিত প্রত্যেকটি মেম্বারকে আশা করি তাঁরা চেনেন। মহামারী ও দুর্যোগের এই কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য ঠিক কী প্রকারের নোংরা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রচিত হচ্ছে দেখুন এবং এই রকম একটি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন স্বয়ং নির্বাচিত একজন সাংসদ! স্বয়ং সাংসদ প্ল্যানিং করছেন, কীভাবে ইয়াস মোকাবিলায় সরকারের তৈরি শেল্টার (স্কুল) গুলিতে বেশি করে লোক ঢুকিয়ে তাঁর এলাকার মানুষকে আরও বেশি করে করোনা রোগে আক্রান্ত করিয়ে রাজ্য সরকারকে বিপদে ফেলা যায়! তাতে তাঁকে যাঁরা ভোট দিয়ে জিতিয়েছিলেন, সেই হতভাগ্য মানুষগুলো মরলেও তাঁর কিছু যায় আসে না।’ সঙ্গে লেখেন, '১৮ টা জল্লাদকে দিল্লি পাঠিয়েছ বাঙালি! বোঝো এবার! ছিঃ।'
যদিও সেই ভাইরাল হওয়া হোয়্যাটসঅ্য়াপ চ্যাট ‘ভুয়ো’ বলে দাবি করেছেন বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি। তাঁর দাবি, তৃণমূলই ভুয়ো স্ক্রিনশট ছড়িয়েছে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ার দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে জ্যোতির্ময় এবং নরহরির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনও উত্তর মেলেনি। তৃণমূলের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ঘটনায় শাসক দলের কোনও হাত নেই। দেবাংশুও দাবি করেছেন, ‘ভিডিয়োটি ১০০ শতাংশ সত্যি।’