স্কুলের মিড–ডে মিলে পড়ুয়াদের পুষ্টির জন্য পড়ুয়া পিছু ১ কেজি করে ছোলা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই ছোলা খেলে শরীর খারাপ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ তা অত্যন্ত নিম্নমানের। বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ বারবার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তার প্রমাণ মিলল কাটোয়া পুর এলাকা–সহ গোটা মহকুমার ৫টি ব্লকেই এই নিম্নমানের ছোলা সরবরাহের অভিযোগ ওঠার মধ্য দিয়ে।
কিছুদিন আগে স্কুলের মিড–ডে মিলে দেওয়া ছোলার মান নিম্নমানের বলে অভিযোগ উঠেছিল। সাঁতুড়ি, রঘুনাথপুর–১ ও ২ ব্লকের বিভিন্ন স্কুল থেকে এমনই অভিযোগ উঠেছে। যার জেরে রঘুনাথপুর–২ ব্লক প্রশাসন ওই ছোলা বিলি না করার জন্য স্কুলগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে। ছোলা বদলের জন্য বিডিও জেলা প্রশাসনকেও জানিয়েছেন। যে সব স্কুলে খারাপ ছোলা দেওয়া হয়েছে, তা বদল করার প্রক্রিয়া চলছে। তার মধ্যেই আবার নিম্নমানের ছোলা পাঠিয়ে দিল কেন্দ্র।
জানা গিয়েছে, অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক সকুলগুলিতে মিড–ডে মিল দেওয়া হবে। তাই কাটোয়া পুরসভা স্কুলগুলিতে চাল, আলুর সঙ্গে নির্দিষ্ট পরিমাণের ছোলা পাঠানো হয়েছে। প্রত্যেক পড়ুয়াকে ১ কেজি করে গোটা ছোলা দেওয়া হবে। কিন্তু সেই ছোলার প্যাকেট খুলে দেখা গেল পোকা–ধরা, অত্যন্ত নিম্নমানের ছোলা।
বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষকদের আশঙ্কা, ‘এই ছোলা দিলে তো অভিভাবকরা খেপে যাবেন। ওই ছোলা বিলি করতে গেলে অভিভাবকদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হবে শিক্ষকদের। এই আশঙ্কা করে ছোলার বদলে দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের একাংশ দাবি জানিয়েছে। এই নিম্নমানের ছোলা ছাত্র–ছাত্রীদের দেব কীভাবে? শরীর খারাপ হলে দায়িত্ব কে নেবে?’
কাটোয়া পুরসভা সূত্রের খবর, পুর এলাকায় প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক মিলিয়ে মোট ৬৭টি স্কুল রয়েছে। পড়ুয়ার সংখ্যা ৮ হাজার ৯২৩ জন। তাদের জন্য মোট ৯ কুইন্টাল ছোলা দেওয়া হয়েছে। কাটোয়ার পুরপ্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি বলেন, ‘এই ছোলা কেন্দ্র দিয়েছে। খুবই নিম্নমানের ছোলা। খেলে ছেলেমেয়েদের শরীর খারাপ হতে পারে। বিষয়টি মহকুমাশাসকের নজরে আনছি।’
এখন প্রশ্ন কেমন ছোলা পাঠিয়েছে কেন্দ্র? জানা গিয়েছে, একে পোকা ধরে ছোলার রঙ কালো হয়ে গিয়েছে, তার ওপর ছোলায় মেশানো রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কাঁকড় ও পাথরকুচি। মুখে তোলার অযোগ্য এই ছোলা। একটা বাজে গন্ধও রয়েছে ছোলাতে। কাটোয়া পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর চন্দনা মাঝির কথায়, ‘এই নিম্নমানের পোকা ধরা ছোলা দেওয়া থেকেই বোঝা যায় পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে কেন্দ্র সরকার। অবিলম্বে এই ছোলার বদলে ভাল মানের ছোলা সরবরাহ করুক কেন্দ্র।’ এখন ওই পোকা–ধরা, কাঁকড় মেশানো ছোলা নিয়ে কী করবেন, ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ।