গত ২ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ওই সন্ধ্যায় যেন মৃত্যুপুরী হয়ে উঠেছিল ওড়িশার বালেশ্বর। রক্তে ভেসেছিল বাহানাগা স্টেশনের আশপাশের এলাকা। সেই বিভীষিকাময় স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেনি দেশবাসী। স্বজন হারানোর কান্না এখনও থামেনি। সম্প্রতি শনাক্ত না হওয়ায় ২৮টি দেহ সংস্কার করেছে ভুবনেশ্বর পুরসভা। তারইমধ্যে দাবি করা হয়েছে যে জয়নগরের ফিরদৌসি লস্কর তাঁর স্বামী আবু বক্কার লস্করের দেহের হদিশ পেয়েছিলেন। তবে হাসপাতালের তরফে সেই দেহ তুলে দেওয়া হয় অন্য পরিবারকে। ফলে স্বামীর দেহ শেষকৃত্যের জন্য বাড়ি ফেরাতে পারলেন না ফিরদৌসি । শুধুমাত্র সার্টিফিকেট নিয়েই তাঁকে বাড়ি ফিরতে হল বলে দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নিলাম হয়ে গেল বালাশোরের অভিশপ্ত সেই তিন ট্রেন, কত দাম উঠল জানেন?
পরিবারের বক্তব্য, পরিবারের একমাত্র রোজগেরে আবুবক্কার ঘটনার দিন চেন্নাই যাচ্ছিলেন। সেইসময় বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ভুবনেশ্বরে চলে যান তাঁর পরিবারের সদস্যরা তারপর বাড়ির লোকজন পাঁচ বার সেখানে গিয়েও আবুবাক্কারের দেহের কোনও খোঁজ পাননি। শেষপর্যন্ত তাঁর ছেলের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। কিছুদিন আগে ভুবনেশ্বর থেকে ফোন করে জানানো হয় তাঁর ডিএন এ মিলে গেছে। আবুবাক্কারের চিহ্নিত করা হয়েছে। সেইমতো ফিরদৌসি আত্মীয়দের সঙ্গে গাড়ি ভাড়া করে হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু, সেখানে গিয়ে জানতে পারেন অন্য পরিবারের হাতে ভুল করে আবুবাক্কারের দেওয়া তুলে দেওয়া হয়েছে।
এই নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বচসা বাঁধে বলে দাবি পরিবাবের। ফিরদৌসিদের দাবি, ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল স্বীকার করে নেয়। তবে শেষপর্যন্ত হাসপাতাল থেকে আবুবাক্কারের ডেথ সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয় ফিরদৌসির হাতে।
এদিকে, আবুবাক্কারের দেহ বাড়িতে না ফেরায় সরকারিভাবে যেসব ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা সেগুলি পরিবার পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন রেল দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে চাকরি দেবেন। কিন্তু, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং দেহ না পাওয়ায় প্রশাসন এ নিয়ে কোনও রকম পদক্ষেপ করছে না বলে ফিরদৌসি দাবি করেছেন।