মৃত্যু হল কুলতলির মৎস্যজীবী অমল দণ্ডপাটের। শনিবার কাঁকড়া ধরতে গিয়ে রয়্যাল বেঙ্গলের হামলায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন ওই মৎস্যজীবী। বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। বাঘের হামলায় তিনি এতটাই জখম হয়েছিলেন, যে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শনিবার রাতেই তিনি মারা গিয়েছেন।
শনিবার কুলতলির জঙ্গলে অন্যান্য মৎস্যজীবীদের সঙ্গে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন অমল দণ্ডপাট। সেই সময় জঙ্গলে ঘাপটি মেরে বসেছিল রয়্যাল বেঙ্গল। সুযোগ পেয়ে আচমকাই ওই মৎস্যজীবীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘটি। চোখে, মাথায় এবং মুখে কামড়ে বাঘটি তাঁকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেই সময় তাঁর চিৎকারের শুনে বাকি মৎস্যজীবীরা লাঠিসোটা নিয়ে ছুটে যান। তাঁদের লাঠির আঘাতে বাঘটি অমলকে ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তিনি গুরুতরভাবে জখম হয়েছিলেন। এরপরে তাঁকে ভর্তি করা হয় বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসা করেও তাঁকে সুস্থ করে তুলতে পারেননি চিকিৎসকরা। শনিবার রাতেই মৃত্যু হয় ওই মৎস্যজীবীর। এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে তাকে হাসপাতালে দেখতে যান প্রাক্তন সুন্দরবন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি মৎস্যজীবীর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
ইদানিং, সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের ওপর বাঘের হামলা বেড়ে চলেছে। গত ১৯ নভেম্বর চিলমারির খাল এলাকায় বাঘের হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন হাজারি মণ্ডল নামে এক মৎস্যজীবী। তার দিনচারেক আগে পিরখালি জঙ্গল এলাকায় আশিস হাজরা নামে এক মৎস্যজীবী বাঘের হানায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তারও কিছুদিন আগে দক্ষিণরায়ের হামলায় মারা গিয়েছিলেন সেলিম মোল্লা নামে এক মৎস্যজীবী।
যদিও বনদ বিভাগের তরফ থেকে বারবার মৎস্যজীবীদের ঘন জঙ্গলে না যাওয়ার জন্য সচেতন করা হচ্ছে। কিন্তু, তারপরেও মৎস্য এবং কাঁকড়া শিকারের জন্য ঘন জঙ্গলে চলে যাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। তাঁদের দাবি, মাছ এবং কাঁকড়া বিক্রি করে তাঁদের জীবন চলে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের শিকার করতে যেতে হয়।