উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে দণ্ড মহোৎসবে যোগ দিতে গিয়ে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছিল পূর্বস্থলীর যজ্ঞেশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ দম্পতি সুভাষ পাল এবং শুক্লা পালের। রবিবার মধ্যরাতে তাদের নিথর দেহ বাড়ি ফেরার পর গতকাল সকালে তাদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। দম্পতির মৃত্যুতে যেমন শোকের ছায়া নেমেছে পরিবারে তেমনি শোকস্তব্ধ গ্রামবাসীরা।
জামাইষষ্ঠীর পর ওই দম্পতি মেয়ে জামাইয়ের সঙ্গে সোদপুরের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি দণ্ড মহোৎসবে যোগ দিয়েছিলেন। তারপরেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। গতকাল সকালে সুভাষ পালের বাড়ি যান স্থানীয় বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। তাদের দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার সময় মানুষের ঢল নেমেছিল। এলাকায় খুবই জনপ্রিয় ছিলেন সুভাষ বাবু। জানা গিয়েছে, সুভাষ পাল শুধুমাত্র স্কুলের শিক্ষকই ছিলেন না, বিভিন্ন সংগঠন, সংঘ, পাঠাগারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি সমাজসেবামূলক কাজ করে বেড়াতেন। যার ফলে এলাকায় তাঁর যথেষ্ট জনপ্রিয়তা ছিল। স্থানীয় সমবায়ের সভাপতি ছিলেন তিনি। সোদপুরে তিনি নতুন ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। মাঝেমধ্যেই গ্রামের বাড়ি থেকে সেখানে যাওয়া আসা করতেন।
গতকাল শশান ঘাটে দম্পতির দেহ পাশাপাশি রেখে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। যজ্ঞেশ্বরপুরের কয়েকজন পুণ্যার্থীও গিয়েছিলেন দণ্ড মহোৎসবে। ঘটনার দিন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন এই গ্রামেরই বাসিন্দা চন্দনা দাস। তিনি বলেন, ‘এরকম দুর্ঘটনা ঘটবে ভাবতেই পারিনি। আমরা গ্রাম থেকে ৬ জন ওনার ফ্ল্যাটে গিয়েছিলাম। তারপর দণ্ড মহোৎসবে যোগ দিয়েছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘ভিড়ে ঠাসাঠাসি উৎসবে পুণ্যার্থীদের ধাক্কা সামলাতে না পেরে প্রথমে শুক্লা দেবী পরে যান। তারপর জোর ধাক্কা সামলাতে না পেরে আমরাও পরে যায়। অনেকে আমার উপরে পড়ে যায়। তখন আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।’ অন্যদিকে, পুণ্যার্থী বকুল দে, পুষ্প বৈদ্যনাথ কোনওভাবে ভিড়ে হাঁটু গেঁড়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন।