গায়ের রং কালো ছিল বলে পছন্দ করতেন না শ্বশুর বাড়ির লোকজন। সব সময় তার ওপর চলত মানসিক নির্যাতন। সেই অবসাদ থেকে আত্মঘাতী হলেন গৃহবধূ। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী থানা এলাকার। এই ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতা গৃহবধূর বাবা-মা। মৃতার নাম সরোজিনী ঘোষ। গতকাল পূর্বস্থলীর শ্বশুর বাড়ি থেকে গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তার শশুর এবং স্বামীকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সরোজিনীর গায়ের রং কালো থাকলেও তার স্বামী দেবার্ঘ্য ঘোষের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল ফেসবুক মারফত। ফেসবুকে সরোজিনীর ফর্সা ছবি দেওয়া ছিল। তাই দেখে সরোজিনীর প্রেমে পড়েছিলেন দেবার্ঘ্য। ফেসবুক চ্যাটের মাধ্যমে তাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। এরপর যখন তারা একে অপরের সঙ্গে দেখা করে তখন জানতে পারে যে ফেসবুকে দেওয়া ছবির সঙ্গে আদতে সেরকম মিল নেই সরোজিনীর। ফেসবুকে তার গায়ের রং ফর্সা থাকলেও আসলে তার গায়ের রং কালো। গৃহবধূর পরিবারের দাবি তার পরেও সরোজনীকে বিয়ে করেছিল দেবার্ঘ্য। প্রায় চার বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু, বিয়ের পর থেকেই স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি এবং অন্যান্য সদস্যরা তার ওপর নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি গায়ের রং নিয়ে খোঁটা দিতেন বলে অভিযোগ। তা সহ্য করতে না পেরে সরোজিনী আত্মঘাতী হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
এরপরেই পুলিশ গৃহবধূর স্বামী এবং শ্বশুরকে গ্রেফতার করে। তবে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় গৃহবধূর পরিবার খুনের অভিযোগ তুলেছেন। ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছিলেন নাকি তাকে খুন করা হয়েছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আজ তার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। যদিও ওই গৃহবধূ কালো বলে আত্মঘাতী হয়েছেন তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরে গৃহবধূর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে বলে মনে করছে পুলিশ।