মিজোরামে নির্মীয়মান রেল সেতু ভেঙে মৃত্যু হয়েছে মালদহের ২৩ জনের। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ভিন রাজ্যে মৃত্যু হল মালদহের আরও এক পরিযায়ী শ্রমিকের। ঘটনাটি ঘটেছে অসমে। টাওয়ার থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ওই শ্রমিকের। মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের নাম ছোটু মমিন (২১)। তিনি মালদহের এনায়েতপুরের বাসিন্দা। অসমের নঘরিয়া এলাকায় থাকতেন ছোটু মমিন। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আত্মীয় পরিজনরা।
আরও পড়ুন: মিজোরামের পর দিল্লি, নির্মাণ কাজে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট, মৃত্যু বাংলার ৩ শ্রমিকের
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোটুর পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। তাই বেশি রোজগারের আশায় ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ওভারহেডের তার লাগানোর কাজ করতেন। সেই সূত্রেই টাওয়ারের ওপর উঠে ওভারহেডের তার লাগাতে গিয়ে অসাবধানতাবশত তিনি নিচে পড়ে যান। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের বক্তব্য, রাজ্যের জনসংখ্যা বেশি কিন্তু কাজ নেই। তাই বাধ্য হয়ে বেশি আয়ের জন্য শ্রমিকদের বাইরে যেতে হচ্ছে। আর তাতেই প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকেই। তাদের প্রশ্ন, এভাবে কত মানুষকে প্রাণ হারাতে হবে? জানা গিয়েছে, মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ বাড়িতে পাঠানো হবে। পরিবারের আশা ছিল ছোটু আয় করলে পরিবারের অবস্থা ফিরবে। কিন্তু তা আর হল না। এখন ফিরবে ছোটুর কফিন বন্দি দেহ। এই ঘটনায় পরিবারের পাশাপাশি স্থানীয়দের মধ্যে শোকের ছায়া নেমেছে। পাশাপাশি অন্যান্য পরিযায়ী শ্রমিকের পরিজনরাও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, প্রায়ই ভিন্ন রাজ্যে কাজে গিয়ে এভাবে প্রাণ হারাতে হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। কিছুদিন আগেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছিল মিজোরামে। রেল ব্রিজ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল ২৩ জন বাসিন্দার। সেই মর্মান্তিক ঘটনার পর রেলের তরফে তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। এর পরেই দিল্লিতে নির্মাণ কাজে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দিল্লিতে মৃত্যু হয়েছিল বাংলার ৩ শ্রমিকের। ৩ জনেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। ঘটনাটি ঘটেছিল গত শুক্রবার। আর এবার ফের মালদহের পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুতে উঠছে প্রশ্ন। প্রসঙ্গত, পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে বারবার রাজ্য সরকারকেই আক্রমণ করেছেন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, রাজ্যে বড় শিল্প নেই। ফলে বাধ্য হয়ে ভিন রাজ্যে কাজে যেতে হচ্ছে শ্রমিকদের। আর তাতেই পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে।