চিরঘুমের দেশে কাঁথির স্বনামধন্য ‘চিকিৎসক,’ গরীবের বন্ধু মলয় সাহু। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তাঁর প্রয়াণে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।তাঁর প্রয়াণে বড় শূন্যস্থান তৈরি হল কাঁথিতে। পূর্ব মেদিনীপুরেও শূন্যতা। কাঁথির মানুষের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ১ টাকার ডাক্তার হিসাবে। যে রাজ্যে চিকিৎসক দেখাতে গেলে এখনও দুবার ভাবেন রোগীরা সেই রাজ্য়ে তিনি ছিলেন এক টাকার ডাক্তার। তবে ইদানিং তাঁর ভিজিট কিছুটা বেড়ে ২ টাকা ও ৫ টাকা হয়েছিল। কিন্তু ২ টাকা ও ৫ টাকায় এখন আর কী হয়! কিন্তু সেই নামমাত্র দক্ষিণাতেই চিকিৎসা করতেন তিনি।
পাড়া প্রতিবেশীরা বলেন, এক ডাকে সাড়া দিতেন তিনি। এক টাকায় চিকিৎসা করতেন তিনি।
সাধারণ জ্বর-জ্বালা, পেট খারাপ, কাটা ছড়া নিরাময়ে তাঁর ওষুধ ছিল একেবারে অব্যর্থ। বহু মানুষ তাঁর কাছে ছুটে যেতেন। তাঁর চিকিৎসা পাওয়ার জন্য বহু দূর দূরান্তের মানুষ ছুটে যেতেন। ওই চিকিৎসক প্রয়াত হয়েছেন এই খবর ছড়িয়ে পড়তে বহু মানুষ ভিড় করেন তাঁর বাড়িতে।
বর্তমানে চিকিৎসকদের ভিজিট একেবারে আকাশছোঁয়া। বেসরকারি জায়গায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে বেগ পান বহু মানুষ। আর সেই মোটা ভিজিট তো দূরের কথা একেবারে উলটো পথে হাঁটতেন তিনি। নিজের বাড়িতেই দুঃস্থ সেবাসদন গড়ে তোলেন তিনি। বহু গরিব মানুষের কাছে তিনিই ছিলেন একমাত্র সহায়। গরিব মানুষের ভরসাস্থল ছিলেন তিনি। সেই চিকিৎসকের প্রয়াণে কাঁদছে বাংলা। কাঁদছে কাঁথি।
তবে একটা সময় তিনি মাত্র ১ টাকা ভিজিট নিতেন। প্রথম দিকে তিনি প্রখ্য়াত চিকিৎসক অজিত সিংহের কাছে সহায়ক হিসাবে কাজ করতেন। পরে তিনি নিজেই চিকিৎসা করতেন। প্রয়াত হলেন সেই ডাক্তার।
সোমবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ কাঁথি শহরের উদয়ন রোডের বাড়িতে প্রয়াত হয়েছেন মলয় সাহু। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। বাড়িতেই প্রয়াত হয়েছেন তিনি। তাঁর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা।