অদম্য জেদ থাকলে সব কিছুই সম্ভব। তা আরও একবার দেখিয়ে দিলেন আনজিরা খাতুন। সন্তান জন্ম দেওয়ার ৫ ঘণ্টার মধ্যেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে সকলের নজর কাড়লেন। সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল কক্ষেই মাধ্যমিকের পরীক্ষা দিলেন মা। পরীক্ষা দেওয়ার তার আগ্রহ এবং অদম্য ইচ্ছেকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলেই। ঘটনাটি মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের নানারাই গ্রামের। আগামী দিনেও সবকটি পরীক্ষা দিয়ে সফল হবেন বলেই দৃঢ় প্রত্যয়ী আনজিরা খাতুন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ডাক্তারের পক্ষ থেকে তার প্রসবের সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, সোমবার সকালে তার প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। পরে তাকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন আনজিরা। তার পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছিল হরিশচন্দ্রপুর হাইস্কুলে। কিন্তু, সদ্য জন্ম দেওয়া সন্তানকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে তার পক্ষে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই হাসপাতালের মধ্যে পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে আনজিরা। এই বিষয়টি জানার পরেই হাপাতাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাসপাতালেরই একটি কক্ষে তার জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে পরীক্ষা দেন আনজিরা।
তার বাবা আমির হোসেন জানিয়েছেন, ‘কয়েক বছর আগে গ্রামের এক ছেলের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে হয়েছিল মেয়ের। তারপরে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল আমার মেয়ের। তাই মাধ্যমিক সে পরীক্ষা দিতে চেয়েছিল।’ প্রথম পরীক্ষা ভালোই হয়েছে বলে জানালেন আনজিরা। তিনি বলেন, ‘বাংলা পরীক্ষা ভালোই হয়েছে। আশা করছি আগামী পরীক্ষাগুলোও ভাল হবে, ভাল ফল হবে। এরপর ভাল একটা চাকরি পাব।
হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত বিএমওএইচ শুভেন্দু ভক্ত বলেন, ‘এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে। এরপর সে পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। তারপরেই আমরা পরীক্ষার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা করি। সন্তান প্রসবের পরেও মা যেভাবে পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে তা আমাদের খুবই ভালো লেগেছে।’