এক ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ। সেখানে আগুন জ্বালানো, বিক্ষোভ, অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়। এখানের সাহেবঘাটা স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুন করার অভিযোগ উঠেছে। যদিও পুলিশ জানাচ্ছে, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু। শুক্রবার থেকে বিক্ষোভ শুরু হলেও চলে শনিবারও। অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগে ৭ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিএসপি পদমর্যাদার এক অফিসারকে। এই আবহে আজ রবিবার সকালে সাহেবঘাটায় যাবেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের দল।
এদিকে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো নিজে যাবেন ঘটনাস্থলে বলে খবর। তবে রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে বিষক্রিয়ার উল্লেখ রয়েছে। কোনও আঘাতের চিহ্ন শরীরে নেই। আমরা সমস্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত করছি।’ ইতিমধ্যেই সাহেবঘাটা পরিদর্শন করেন রায়গঞ্জ রেঞ্জের ডিআইজি অনুপ জয়সওয়াল, রায়গঞ্জের এসপি সানা আখতার এবং তদন্তে আসে রাজ্য শিশু অধিকার ও সুরক্ষা কমিশনের টিম। পুলিশ কর্তারা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
অন্যদিকে বিজেপির প্রতিনিধি দল এই গ্রামে ঢোকে। তারপরই রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘একের পর এক এই ধরনের ঘটনা ঘটলেও নির্বিকার রাজ্য প্রশাসন। অবিলম্বে সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’ পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘সিবিআই তদন্ত তো চাইবেনই। যাতে নিজেদের মতো করে তদন্তকে প্রভাবিত করা যায়। আর এইসব কমিশন উত্তরপ্রদেশের উন্নাও, হাথরাস, প্রয়াগরাজ বা পুলিশের সামনে খুন করার ঘটনার সময় তাঁরা যান না কেন?’
ঠিক কী বলেছেন প্রিয়াঙ্ক? জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো জানান, আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি বেহাল। কিশোরীর মা গুরুতর অভিযোগ করেছেন। সবদিক খতিয়ে দেখতেই ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। এই ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে পুরো পরিস্থিতি দেখে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেব। পুলিশ যেভাবে মৃতদেহ টেনে নিয়ে গিয়েছে, তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এই ঘটনাকে মোটেই মানবিক বলা যায় না। পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। একটা মেয়েকে অপহরণ করে ধর্ষণ করে খুন করা হল। তাঁর মা আমাকে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ যেভাবে নাবালিকার দেহ টেনে নিয়ে যাচ্ছে, সে ভিডিয়ো আমরা দেখেছি। গ্রামের লোকজন এবং তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে আমরা কথা বলব।’