সন্দেশখালিতে এখনও পর্যন্ত কোনও ধর্ষণের অভিযোগ জমা পড়েনি বলে দাবি করল রাজ্য পুলিশ। বুধবার রাজ্য পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, একটি অংশের তরফে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। আদতে সন্দেশখালিতে কোনও স্থানীয় মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ জমা পড়েনি। এমনকী সন্দেশখালিতে পরিদর্শনে গিয়ে কোনও স্থানীয় মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ পায়নি পুলিশের বিশেষ দল, রাজ্য মহিলা কমিশন এবং জাতীয় মহিলা কমিশন। যদিও রাজ্য পুলিশের তরফে সেই বিবৃতি জারি করার কিছুক্ষণ পরেই জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফে অভিযোগ করা হয় যে স্থানীয় মানুষদের হুমকি দিচ্ছে পুলিশই। তার ফলে স্থানীয় মানুষ যৌন নির্যাতন এবং শারীরিক নির্যাতন অভিযোগ দায়ের করতে পারছেন না বলে কমিশনের তরফে দাবি করা হয়েছে।
কী হয়েছে সন্দেশখালিতে?
রেশন দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) অভিযানের পরে সন্দেশখালির ছবিটা পুরোপুরি পালটে গিয়েছে। তৃণমূল শাহজাহান ও তাঁর শাগরেদ শিবপ্রসাদ হাজরার দলবলের বিরুদ্ধে তুমুল বিক্ষোভে সরব হন স্থানীয় মানুষ। যে বিক্ষোভে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন মহিলারা। একাধিক মহিলা শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন। তাঁরা দাবি করেন যে ‘সুন্দরী’ মেয়েদের ‘আলাদা’ চোখে দেখত শিবুর দলবল। সভা থাকার নাম করে রাত ১২টার পরে ডেকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
যদিও বুধবার রাতে রাজ্য পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, ‘রাজ্য মহিলা কমিশন, সিআইডির ডিআইজির নেতৃত্বাধীন ১০ মহিলা সদস্যের অনুসন্ধান দল এবং রাজ্য পুলিশের তদন্তের সময় এখনও পর্যন্ত কোনও মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ জমা পড়েনি। সন্দেশখালিতে যাওয়ার পরে জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরাও একই কথা বলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন যে সন্দেশখালিতে অনুসন্ধানের সময় কোনও স্থানীয় মহিলার থেকে ধর্ষণের কোনও অভিযোগ মেলেনি। আমরা আবারও জোর দিয়ে বলতে চাই, যা যা অভিযোগ জমা পড়েছে, সেগুলির উপযুক্তভাবে তদন্ত করা হবে। সেইমতো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাজ্য পুলিশের সেই বিবৃতির ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফে বলা হয়, 'আমাদের তদন্ত কমিটি জানতে পেরেছে যে পশ্চিমবঙ্গে নির্যাতিতদেরই হুমকি দিচ্ছে স্থানীয় পুলিশ। তাঁদের যৌন নির্যাতন এবং শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করতে বাধা দিচ্ছে।' উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই সন্দেশখালিতে গিয়েছিল জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল। তারপর থেকে প্রকাশ্যে কমিশনের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতেই প্রথমবার মুখ খুলেছে কমিশন।
আরও পড়ুন: রাজ্যে ধর্ষকদের দ্বারা, ধর্ষকদের জন্য সরকার চলছে, মমতার ইস্তফার দাবি BJP-র