আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে অশান্তি। বিভিন্ন জায়গায় গুলি চলার পাশাপাশি বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। তারওপর জেলায় জেলায় উদ্ধার হচ্ছে বিপুল পরিমাণে বোমা। সেই আবহে বোমা বাঁধতে গিয়ে গুরুতর জখম হল এক যুবক। বোমা বিস্ফোরণের ফলে তাঁর শরীরের অধিকাংশ অংশ কার্যত ঝলসে গিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর থানার ঘোড়াদল এলাকায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যুবকের নাম আরিফ হোসেন। আরিফ একজন তৃণমূল কর্মী বলেই দাবি করেছে তাঁর পরিবার। শুধু তাই নয়, ভোটের জন্যই বোমা বাঁধা হচ্ছিল বলে দাবি করেছেন তাঁর মা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার ভোরে বাড়ির কাছেই বোমা বাঁধছিল আরিফ হোসেন মোল্লা। তখনই বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনায় বিকট শব্দে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে দেখেন বোমা বিস্ফোরণের জেরে ঝলসে গিয়েছে আরিফ। এরপরেই তাঁকে উদ্ধার করে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যুবকের মাথা থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত বেশিরভাগ অংশই বিস্ফোরণের জেরে ঝলসে গিয়েছে। এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় মথুরাপুর থানার পুলিশ। তবে কী কারণে এই বোমা বিস্ফোরণ তা খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে মথুরাপুর থানার পুলিশ। এবিষয়ে স্থানীয় এসডিপিও বিশ্বজিৎ নস্কর বোমা বাঁধার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে।
আরিফের মা জানান, তাঁর ছেলে কলকাতায় বই বাঁধার কাজ করে। তবে কিছুদিন হল বাড়ি ফিরেছে। বন্ধুদের কাছ থেকে তিনি বোমা বাঁধা শিখেছেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে খাবার পর বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে গিয়েছিল আরিফ। আমরা ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এরপর গভীর রাতে আমার চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ শুনতে পাই। ভেবেছিলাম হয়তো বাড়ি থেকে কোনও কিছু চুরি হয়ে গিয়েছে। তারপর জানতে পারি বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে।’ আরিফের মায়ের দাবি, তাঁর ছেলে আগাগোড়ায় তৃণমূল করেন। তাঁর স্বামী, ছোট ছেলে আরিফ এবং বড় ছেলে তিনজনেই বই বাঁধার কাজ করেন। আগে আরিফ বোমা বাঁধত না তবে ইদানিং বাড়ি এসে বন্ধুদের কাছ থেকে বোমা বাধা শিখেছিল বলে তিনি জানান।
কী কারণে বোমা বাধা হচ্ছিল? সেই প্রশ্নের উত্তরে আরিফের মা জানান, সামনেই ভোট রয়েছে সেই কারণেই বোমা বাঁধা হচ্ছিল। যদিও ছেলেকে বোমা বাঁধার কাজে তিনি কেন বাধা দেননি? সেই প্রশ্নের উত্তরে আরিফের মা বলেন, ‘ছেলে বড় হয়ে গিয়েছে। এখন আমরা শাসন করলে আর শুনবে না। তাই বারণ করিনি।’ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আরিফের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তর করতে বলা হয়েছে।